স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহ তারাকান্দা উপজেলায় চর ফরিদপুর শর্ষিনাবাদ দারুসুন্নাৎ ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফি,বেতন, পরীক্ষা ফি, রেজিষ্ট্রেশন ফি, এডমিট কার্ড, পরীক্ষার ফরমপূরণ সহ যাবতীয় প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে কোন প্রকার রশিদ প্রদান করা হয় না।

উপ-বৃত্তির টাকা পাওয়ার জন্যও প্রতিষ্ঠানকে দিতে হয় জনপ্রতি ৩০০টাকা করে।

অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমেও মোটা অঙ্কের উৎকোচ গ্রহন করা হয়েছে।

একাধিক শিক্ষক এ বিষয়ে বারবার অভিযোগ করার পর ও কোনরুপ তদন্ত করা হয়নি।

সহকারী শিক্ষক লুৎফর রহমান, সহকারী শিক্ষক মোঃ মোসারফ হোসেন, সহকারী শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক মোঃ আঃ লতিফ, সহকারী শিক্ষক এবতেদায়ী প্রধান নুরুল হাবীব, সহকারী শিক্ষক আজিজুল হক বলেন, ১৯৮০ সালে এ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরু থেকে অনেক সুষ্ঠ ও নিয়ম মাফিক চলছিল কিন্তু অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে একনায়েকতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন।

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রশিদ ছাড়া অর্থ আদায় করার নিয়ম তিনি করেছেন। প্রতি বছর সরকারী অনুদান ছাড়াও ১৪/১৫ লক্ষ টাকা বার্ষিক বিভিন্ন খাতে আদায় করা হয়। মাত্র দুইজন কর্মচারীর বেতন শুধু প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া হয়। এছাড়া সকল শিক্ষক সরকারী কোষাগার থেকে তাদের বেতন উত্তোলন করেন।

আলিম ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আঃ মোতালেব বলেন, উপ-বৃত্তির টাকা পাওয়ার জন্য প্রত্যেকে ৩০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। অধ্যক্ষ স্যার বলেছেন এই টাকা উপ-বৃত্তির অফিসিয়াল কাজের জন্য লাগবে।

সহকারী শিক্ষিকা নুর জাহান বেগম বলেন, ২০১০ সাল থেকে এখানে আছি কোন রশিদ এ পর্যন্ত চোখে দেখিনি। আমরা শুধু কত টাকা কি খাতে উঠানো হয়েছে তা লিখে জমা দেই। কোন রশিদ শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় না। আমার নিজেরাও অনেক সময় বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হই।

সাবেক কমিটির সদস্য মাহবুবুল হক মাহবুব বলেন, ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮সাল পর্যন্ত কমিটিতে ছিলাম কিন্তু এটি ছিলো নামমাত্র কমিটি। সকল দিক দিয়ে অধ্যক্ষ সকল কাজ করছে আমাদের কোন পরামর্শ নেয়নি। সভাপতি এবং অধ্যক্ষ মিলে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করেন। আমরা শুধু রেজুলেশনে স্বাক্ষর করি। প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয় হিসাব অধ্যক্ষ সঠিকভাবে করেননি। বর্তমান অধ্যক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে ও নানা অনিয়ম করে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা তিনি আত্মসাত করেছেন। আমি বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি কিন্তু কোন তদন্ত করা হয়নি। আপনাদের মাধ্যমে সুষ্ঠ তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য দাবী জানাচ্ছি।

অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ দায়ের করেছে তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমার সুনাম নষ্ঠ করার জন্য কিছু কু-চক্রকারী মহলের পরামর্শে এ সকল কাজ করছে। তারা যে সকল অভিযোগ দায়ের করছে তার সকল হিসাবপত্র আমার কাছে আছে। কোন কোন খাতে আয় এবং কোন কোন খাতে ব্যয় করা হয়েছে তার হিসাব আছে। ঘুষের বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগের যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা। কারন আমি দায়িত্ব গ্রহনের পূর্বেই এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

তারাকান্দা উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, শিক্ষকদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করা হচ্ছে। এই বিষয়ে তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো সম্ভব হবে।