সবুজ ডেস্ক :
মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মুসলিম সমাজে জুমার দিনটিকে পৃথিবীর অন্যতম তাৎপর্যবহ দিবস হিসেবে বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করেছেন।
জুমা নামে পবিত্র কোরআনে একটি স্বতন্ত্র সূরা নাজিল হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেছেন,
فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِن فَضْلِ اللَّهِ وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
‘অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর ও আল্লাহকে অধিকরূপে স্মরণ কর; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সূরা জুমুআ, আয়াত : ১০)
সপ্তাহের প্রতিদিনই জুমার দিনের মতো মসজিদে আসা প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের দাবি হওয়া উচিত।
যাই হোক আল্লাহ তায়ালা উম্মতে মুহাম্মাদিকে জুমার দিনের মতো মসজিদে এসে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন।
জুমার দিনে রয়েছে কিছু সুন্নাত এবং মুস্তাহাব কার্যাদি। যা সম্পাদনের সঠিক সময় ও আনুসাঙ্গিক বিষয়াদি আমাদের অজানা। জুমার দিন নামাজের প্রস্তুতিমূলক ও প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো-
জুমার নামাজের বিধানের হিকমত:
মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের ভালোবাসা ও মুহাব্বাত বৃদ্ধির লক্ষ্যে মহল্লার জামাতের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, শহরের জন্য জুমা ও বাৎসরিক ঈদের নামাজ এবং বিশ্ববাসীর মহাসম্মেলনের জন্য মক্কায় হজের ব্যবস্থা করেছেন। ইহা আল্লাহর হিকমত।
জুমার দিনের ফজিলত:
সূর্য উদিত হয়েছে এমন দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন উত্তম। এ দিনে হজরত আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ দিনেই তাকে জান্নাত দান করা হয়েছে। এ দিনেই তাকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে। এবং এ দিন ব্যতিত কিয়ামাত অনুষ্ঠিত হবে না।
জুমার নামাজের হুকুম:
প্রত্যেক মুসলিম বালেগ, বিবেকবান, স্বাধীন, ঘর-বাড়ি বানিয়ে একটি জনপদে স্থায়ীভাবে বসবাস করে এমন পুরুষদের ওপর দুই রাকাত নামাজ পড়া ফরজ।
জুমার জন্য গোসলের সময়:
জুমার নামাজের জন্য গোসল করা এবং নামাজে যাওয়ার মুস্তাহাব সময় শুরু হয় ফজরের পর থেকে শুরু হয়ে জুমার আজান পর্যন্ত। জুমার গোসল দেরী করে করা উত্তম।
নামাজে যাওয়ার উত্তম সময়:
জুমর জন্য যাওয়ার উত্তম সময় শুরু হয় ফজর থেকেই। তবে ওয়াজিব সময় হলো ইমামের প্রবেশের পরে দ্বিতীয় আজানের সময়। মুসলিম ব্যক্তি সূর্য ওঠা থেকে ইমাম মসজিদ থেকে বের হওয়া পর্যন্ত সময়কে পাঁচ ভাগে ভাগ করে নেয়া। যার দ্বারা সে প্রতিটি মুহূর্ত জানতে পারবে।
জুমার দিন সফর:
কোনো প্রয়োজন ব্যতিত দ্বিতীয় আজানের পর সফর করা বৈধ নয়। প্রয়োজন- সফরের সঙ্গীর চলে যাওয়া, পরিবহন চলে যাওয়া তা হতে পারে বাস-গাড়ি, জাহাজ, বিমান ইত্যাদি।
জুমার আজান:
জুমার প্রথম এবং দ্বিতীয় আজানের মধ্যবর্তী সময় এমন হওয়া উত্তম যে, একজন মুসলিম যারা দূরে অবস্থান করে, ঘুমন্ত ও গাফেল তারা নামাজের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণপূর্বক জুমার আদব ও সুন্নাতগুলো আদায় করে নামাজের জন্য উপস্থিত হতে পারে।
জুমার নামাজের সময়:
জুমার নামাজের উত্তম সময় হলো সূর্য ঢলে পড়া থেকে শুরু করে জোহরের সময় শেষ হওয়া পর্যন্ত। তবে সূর্য ঢলে পড়ার আগেও পড়া যাবে।
মাসবুক ব্যক্তির জুমা:
যে ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে এক রাকাত জুমা পাবে, সে দ্বিতীয় রাকাত পড়ে জুমার নামাজ পূর্ণ করবে। আর যে এক রাকাআতে চেয়ে কম পাবে অর্থাৎ দ্বিতীয় রাকাতের রুকু পাবে না, সে জোহরের নিয়ত করবে এবং চার রাকাআত নামাজ আদায় করবে।
সুতরাং মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা উপরোক্ত বিষয়গুলো যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।