কেন্দুয়া সংবাদদাতা : নেত্রকোনা জেলার অন্যতম এবং বড় উপজেলা কেন্দুয়া।এ উপজেলায় নেই কোন বৃহৎ শিল্প কারখানা। এই অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষের জীবন-জীবিকা কৃষিনির্ভর। উপজেলার ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করে জীবিকা-জীবিকায় টিকে থাকার সংগ্রাম চলছে হাজার হাজার কৃষক পরিবারের। ধান, গম, পাট, সরিষা, আলুসহ বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজি চাষাবাদ করেন স্থানীয় কৃষকরা। তবে বেশিরভাগ কৃষক প্রধান ফসল হিসেবে আমন ও ইরি-বোরো মৌসুমে ধান চাষাবাদ করেন। আমন ও ইরি-বোরো মৌসুমের চাষাবাদের পরে একই জমিতে চাষাবাদ করে বাড়তি ফসল উৎপাদনে স্থানীয় কৃষি বিভাগ কৃষককে উৎসাহিত করে যাচ্ছেন।
চিরাং ইউনিয়নের পূর্বরায় গ্রামের কৃষক হাসেম ও বজলু মিয়া বলেন, তারা আমন ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ শেষ করেছেন। এখন তারা জমিতে হাইব্রিড জাতের বোরো ধান চাষাবাদের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বীজতলা তৈরির জন্য জমিতে সেচ দিয়ে পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ দিচ্ছেন তারা। দেওপাড়ার কৃষক বুলবুল বলেন, তিনি আমন মৌসুমে উপসহকারী কৃষি অফিসারের পরামর্শে তার ২ বিঘা জমিতে ব্রি-৮০ জাতের স্বল্পমেয়াদী ধান চাষাবাদ করেন। কৃষি প্রণোদনা হিসাবে তিনি বোরো বীজ পেয়েছেন। বোরো মৌসুমে চাষাবাদের জন্য তিনি ব্রি-৮৪ ধানের বীজতলা তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আমন ধান কেটে নেওয়ার পরে অনেক কৃষক ওই জমিতে সরিষা চাষাবাদ করছেন। ইতোমধ্যে জমিতে সরিষা বীজ বপন কাজ শেষ করেছেন চাষিরা। প্রস্তুতি নিচ্ছেন সরিষা তুলে নিয়ে সেই জমিতে ও ধান কাটার পর খালি পরে পড়ে থাকা জমিতে ইরি-বোরো মৌসুমের ধান চাষাবাদের। সেজন্য কৃষকদের বর্তমানে ব্যস্ততা বোরোর বীজতলা তৈরিতে। উপজেলার খালিজুরা গ্রামের কৃষক শহিদ মিয়া বলেন, তিনি ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষাবাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। চারার চাহিদা পূরণের জন্য তিনি কৃষি অফিসের পরামর্শে ইতোমধ্যে এক বিঘা জমিতে ব্রি-৭৪ বীজ বপন কাজ সম্পন্ন করেছেন। বর্তমান আবহাওয়া অনুকূল থাকায় বীজতলা থেকে সুস্থ সবল চারা পাওয়ার আশা করছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি অফিসার এ কে এম শাহজাহান কবীর জানান,উপজেলায় ২০৭৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং কৃষি প্রণোদনা হিসাবে ৩৫০০ জন কৃষককে উফসী এবং ৪৪০০ জন কৃষককে হাইব্রিড মোট ৭৯০০ জন কৃষককে বোরো বীজ প্রদান করা হয়েছে। উপজেলায় বোরো মৌসুমে চাষাবাদের জন্য বীজতলায় বীজ বপন কাজ চলমান রয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪০০ হেক্টর জমিতে বীজ বপণ করা হয়েছে।
সুস্থ সবল চারা উৎপাদন ও চাষাবাদ করে কৃষকরা যাতে লাভবান হতে পারে সেজন্য আমাদের সকল উপসহকারী কৃষি অফিসারগন মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি আমরা উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান কৃষকের মাধ্যমে চাষাবাদ করে স্থানীয় ভাবে বীজের চাহিদা পূরণের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি।