শেখ শামীম : দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রভাব নেত্রকোণার কলমাকান্দায় পড়েছে। এর প্রভাবে কলমাকান্দার পাঁচদিন ব্যাপী ঐতিহ্যবাহী ১৭৫ তম চেংগ্নী মেলায় জন সমাগম কম হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘুরে জানা গেছে, দোলযাত্রা পূজা উপলক্ষে গত সোমবার (৯ মার্চ) নেত্রকোণার কলমাকান্দায় লেংগুড়া ও খারনৈ ইউপির সীমান্তবর্তী গোপালবাড়ী চেংগ্নী গ্রামে পাঁচ দিন ব্যাপী ঐতিহ্যবাহী চেংগ্নী মেলা শুরু হয়। এ মেলা চলার কথা ছিল আগামী শনিবার পযর্ন্ত্য। এ মেলায় ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় ধরনের হাজার খানেক দোকান বসেছিল। নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সী বিপুল সংখ্যক মানুষ প্রতিদিন মেলায় আসতেন।

প্রতি বছরই ভারত সীমান্তঘেঁষা এ মেলায় ওপারের তরুণ-তরুণীরা দল বেঁধে সীমান্ত পারি দিয়ে মেলায় আসতেন। সারাদিন মেলায় কাটিয়ে সন্ধ্যার আগেই ফিরে যায় তারা। নীরব বাঁধার প্রাচীর অতিক্রম করে সৃষ্টি করে তারা এপার-ওপারের আদিবাসীসহ সবার মধ্যে মৈত্রীর বন্ধন। তবে করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়ছে এ ঐতিহ্যবাহী ১৭৫ তম চেংগ্নী মেলায়।

এ মেলাকে ঘিরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ ছাড়া মেলায় যাতে কোনো অনৈতিক ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে না পারে সাদা পোশাকে পুলিশের ও বিজিবি জোয়ানদের নজরদারি ছিল।

এবিষয়ে উপজেলার বটতলা গ্রামের আজম প্রতিনিধিকে বলেন আমি প্রতি বছরই পরিবার পরিজন নিয়ে ঐতিহ্যবাহী চেংগ্নী মেলায় ঘুরতে আসি। কিন্ত করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে এবার পরিবারের কাউকে নিয়ে আসি নাই। কখন যে আক্রান্ত হয়ে যায় এই ভয়ে। একই কথা বলেন কলমাকান্দার ধোপাপাড়া গ্রামের আদম আলী সিকদার।

এ মেলায় অংশ নেয়া দোকানি বিপ্লব বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত ঘেষাস্থলে প্রতিবছরই এ মেলা বসে। যার ফলে দুদেশের মানুষের মিলনের স্থল পরিনত হয়ে থাকে। কিন্তু এবছর করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের কারণে আশানুরূপ সমাগম ঘটেনি এবং আমরা আশা করেছিলাম মুজিববর্ষ উপলক্ষে এ বছর মেলা আরো জমজমাট হবে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে এবার মানুষের তেমন সাড়া পড়েনি। নির্ধারিত সময়ের আগেই মেলা শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমরা ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেলাম।

চেংগ্নী পূজামন্ডপ এর সভাপতি ও মেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি স্থানীয় ইউপির সদস্য সাজল চন্দ্র হাজং বলেন, আমরা পাঁচ দিনের মেলা উদযাপনের পারমিশন পেয়ে ছিলাম প্রশাসনের পক্ষ থেকে। এ বছর করোনা ভাইরাসের প্রভাবে মেলায় দর্শনার্থীদের সমাগম কম। আর তাই আমরা মনে করছি যে ভারত থেকে ও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে লোকজন যেহেতু আসছেন না নির্ধারিত সময়ের আগেই মেলা সমাপ্তি ঘোষণা করে দেব।