স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহ জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কালচারাল অফিসার আরজু পারভেজ বলেছেন, গত পাঁচ দশকে ময়মনসিংহ সংগীত বিদ্যালয় অসংখ্য শিল্পী সৃষ্টি করেছে যারা দেশে বিদেশে সুনাম অর্জন করে ময়মনসিংহের সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করেছে।

তিনি আরো বলেন, প্রাচীন এ বিদ্যাপীঠে সময়ে সময়ে দেশের অসংখ্য গুণী সঙ্গীতজ্ঞদের উপস্থিতিতে শুদ্ধ সংগীতের চর্চা অব্যাহত থাকায় ময়মনসিংহ সংগীত বিদ্যালয় আজ অহংকার আর গৌরবের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আরজু পারভেজ আরো বলেন, সংগীত বিদ্যালয়ের সুযোগ্য পরিচালক ও নিবেদিতপ্রাণ সাংস্কৃতিক কর্মী নজীব আশরাফ এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সংগীত বিদ্যালয় আজ নতুন রুপে আবির্ভূত হয়েছে যার সুবিধাভোগী হবে আমাদের তরুণ প্রজন্ম।

বর্ষবরণ ১৪৩০ ও ঐতিহ্যবাহী ময়মনসিংহ সংগীত বিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে শুক্রবার বিকালে সংগীত বিদ্যালয় মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আরজু পারভেজ এসব কথা বলেন। ময়মনসিংহ সংগীত বিদ্যালয়ের সভাপতি লায়ন মিজানুর রহমান খান লিটনের সভাপতিত্বে ও সংগীত বিদ্যালয়ের পরিচালক সাংবাদিক নজীব আশরাফ এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ সংগীত বিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক নাট্য ব্যক্তিত্ব শাহাদাত হোসেন খান হিলু, শাস্ত্রীয় সংগীত প্রশিক্ষক ওস্তাদ বিজন তোপদার, বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা.গণপতি আদিত্য, পুলিশ ইন্সপেক্টর কার্তিক পাল, সাংবাদিক মতিউল আলম, বিশিষ্ট শিল্পী শাফায়েত জামিল সাজু প্রমুখ।

শাহাদাত হোসেন খান হিলু তার বক্তব্যের শুরুতেই ১লা বৈশাখ ১৩৮০ বাংলা সনে ময়মনসিংহ সংগীত বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জড়িত যে সকল প্রয়াত গুনী ওস্তাদ ও শিল্পীদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন এবং সংগীত বিদ্যালয়ের ৫০ বছর পুর্তি উপলক্ষে দেশ বিদেশে থাকা প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শিল্পীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন এবং বিদ্যালয়ের পরিচালক নজীব আশরাফ এর একক প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়ের অবকাঠামোসহ সার্বিক উন্নয়নের জন্য করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানান।

তিনি ময়মনসিংহ সংগীত বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও বরেণ্য নাট্যকার প্রয়াত শেখ আকরাম আলী, প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ প্রয়াত ওস্তাদ বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য, প্রশিক্ষক প্রয়াত ওস্তাদ বাদল চন্দ, প্রয়াত ওস্তাদ ইমদাদুল হক, প্রয়াত ওস্তাদ অনিল তালুকদার, প্রয়াত ওস্তাদ বদরুল হুদা, প্রয়াত নৃত্যগুরু যোগেশ দাস, প্রয়াত নৃত্যগুরু পীযূষ কিরণ পাল, প্রয়াত নৃত্যগুরু ইউনুস আহমেদ বাবলু , প্রয়াত তালযন্ত্র প্রশিক্ষক কমল কুমার দাস, প্রয়াত নজরুল সংগীত শিল্পী কামরুজ্জামান মনি, বিশিষ্ট শিল্পী প্রয়াত আব্দুন নঈম, বিশিষ্ট শিল্পী ও প্রাক্তন সম্পাদক প্রয়াত মোতাহার হোসেন বাচ্চু, প্রয়াত লোক সংগীত শিল্পী মঞ্জুশ্রী বিশ্বাস, বিশিষ্ট শিল্পী ও নাট্যকার প্রয়াত সারোয়ার চৌধুরী, বিশিষ্ট শিল্পী প্রয়াত আক্তারুজ্জামান টুকটুক, প্রয়াত শিল্পী মেহেরুন্নেসা খানম টুকটুক, প্রয়াত জহির উদ্দিন সেলিম প্রমুখ।

এ ছাড়া প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শিল্পী ও প্রশিক্ষক হিসেবে সুদীর্ঘ সময় জড়িত ছিলেন স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত বরেণ্য তালযন্ত্র প্রশিক্ষক ওস্তাদ পবিত্র মোহন দে, ওস্তাদ সমীর চন্দ কটন, ওস্তাদ নারায়ন দাস, ওস্তাদ মোফাজ্জল হোসেন বালা, বিশিষ্ট শিল্পী ছালাম উদ্দিন খান, ভারত বাংলাদেশের প্রখ্যাত শিল্পী মিতালী মুখার্জী, তালযন্ত্র শিল্পী নির্মল দাস, বংশীবাদক শাহাব উদ্দিন খান, নৃত্য শিক্ষক শাহজাদা,আশীষ রায়, শিল্পী চয়ন সেন, গীতিকার শেখ জলিল, মাখন রায়, মাইকেল চন্দ, অধীর দাসসহ পৃষ্ঠপোষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

শাহাদাত হোসেন খান হিলু উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, রোজার মাস থাকায় সংগীত বিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্তভাবে আয়োজন করেছি অচিরেই সকলের অংশগ্রহণে ব্যাপক অনুষ্ঠান করার ইচ্ছা রয়েছে।

আলোচনা সভার আগে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয় এবং ইফতারের সময় কেক কেটে ইফতার গ্রহন করা হয়। পরে বর্ষবরণ উপলক্ষে আয়োজিত সংগীতানুষ্ঠানে গান পরিবেশন করে মোবারক হোসেন অনাদি, শাফায়েত জামিল সাজু, রুদ্রাক্ষী পাল দিয়া, আনুষ্কা চক্রবর্তী দিয়া, সুস্মিতা পাল, মিনাশ্রী ভৌমিক মৌ, শানিন তাইয়্যেবা খান, শুভশ্রী রায় পূজা, গুলেনুর আলম মারিয়া, সিঁথি দত্ত তনুশ্রী, অপিতা সরকার, দেবস্মিতা পাল রাশি, অঝরা কর্মকার,নিলাক্ষী পাল নাথালী, আরাত্রিকা রায়, রুহানরাজ দেবনাথ, ঋতুরাজ দেবনাথ রাহুল,আদ্রিতা চন্দ, বৃন্দা সাহা, আদৃতা দাশ তনু, কৃপা পাল, তনুশ্রী দাস, কুইন বসাক এতে তবলা সঙ্গত করে টোটন ভৌমিক ও প্লাবন চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল ক্ষুদে নাচিয়ে কুইন বসাকের একক নৃত্য। অনুষ্ঠানে সহযোগিতা দেওয়ার জন্য এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুজ্জামানকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।

সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিদ্যালয়ের পরিচালক নজীব আশরাফ জানান, বিদ্যালয়ের পুরনো কাগজ পত্র ও রেকর্ড নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অনেক শিল্পী শিক্ষার্থীদের নাম হয়তো বাদ পড়ে যেতে পারে কারো জানা থাকলে অবহিত করার জন্য অনুরোধ জানানো গেল তবে উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরবর্তীতে যারা সংগীতে খ্যাতি অর্জন করে ময়মনসিংহের সুনাম অক্ষুন্ন রেখেছেন তাদের মধ্যে বিশিষ্ট শিল্পী শহীদুল আলম লস্কর, আনোয়ার হোসেন আনু, শহীদুজ্জামান স্বপন, লুৎফর রহমান খোকন, মোহাম্মদ আলম, ইমাম হোসেন স্বপন, তাহমিনা ইকবাল ময়না, প্রদীপ তালুকদার, নজীব আশরাফ, বিজন কুমার তোপদার, এম.এ হান্নান খান, স্বপন সরকার, হুমায়ুন কবীর, ফরিদা ইয়াসমিন, তপন কুমার দাস,উৎপল দত্ত রায়, কার্তিক পাল, রবিউল হাসান রুবেল, শিল্পী রায়, মোহাম্মদ শোয়েব, সালাহউদ্দিন, তানভীর তমাল, আয়েশা সুলতানা রতœা, অঞ্জনা সরকার মনি, আশরাফুন্নাহার লাকী,বিপলী রায়, আমিনুল ইসলাম, সম্পা পাল, সমীর সরকার, ইসহাক মাহমুদ, জেবুন্নেছা জেবা,তানভিরুল ইসলাম সজীব, শামসাদ বেগম ববি, শাফায়েত জামিল সাজু, রুপা রক্ষিত, শ্রেয়সী ভাদুড়ী, রুদ্রাক্ষী পাল দিয়া,গীতাঞ্জলি ঘোষ, আনুষ্কা চক্রবর্তী দিয়া,লাবণ্য রায়, রোদসী পাল, দুলাল সরকার (গীটার), শেখ মোহাম্মদ শরীফ রোমেল(গীটার), মোজাফফর হোসেন (বাঁশী),রিপন সাহা (বেহালা), নাজমুল হক লেলিন (নৃত্য),জয়নাল আবেদিন (নৃত্য), শারমিন আহমেদ সুমী(নৃত্য), মধুসূদন রায়(তালযন্ত্র), উৎপল সরকার (তালযন্ত্র), কমল পোদ্দার (তালযন্ত্র),সালাহ উদ্দিন মোঃ রুবায়েদ(তালযন্ত্র), সন্দীপ সরকার (তালযন্ত্র),প্লাবন চক্রবর্তী (তালযন্ত্র) প্রমুখ।