ডেস্ক রিপোর্ট : ঈদ এসেছে, সঙ্গে এনেছে শান্তি আর আনন্দের সওগাত। সব ভেদ ও পরিচয় ভুলে সেই দিন মানুষ কেবল মানুষকেই বুকে জড়াবে। সেই মিলনের আকুতি, ঈদের সেই রঙিন বারতাই কি সবার মনে অধীর বাঁশরির মতো বাজছে না? বহু বর্ষ আগে কবি কাজী নজরুল ইসলাম এই মর্মের কথাই তাঁর গানের কথায় জানিয়েছিলেন, ‘আজ ভুলে যা সব হানাহানি, হাত মেলা হাতে’।

এই আয়োজন তো জীবনেরই উদ্যাপন। ঈদের এই আনন্দ আমরাও ভাগ করে নিতে চাই আমাদের প্রিয় পাঠক, লেখক, বিজ্ঞাপনদাতা, এজেন্টসহ সব শুভানুধ্যায়ীর সঙ্গে। সবাইকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

এই উৎসব জীবনকে নতুন করে রাঙানোর উৎসব। সব সংকীর্ণতা ও ভেদাভেদ ভুলে একে অপরের সঙ্গে মিলিত হওয়ার উৎসব।

পরস্পরের বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হয়ে ওঠার এক মহান উপলক্ষ ঈদ। ঈদের আগমনী সুরেও বেজে চলেছে মানুষে মানুষে মিলনের এই আকুতি। তাই মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ সব ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের প্রতিবেশীদের নিয়ে তাদের সবচেয়ে বড় উৎসব বরণের জন্য প্রস্তুত।

সামাজিক উৎসব সমাজের সবার অংশগ্রহণ ছাড়া সুন্দর হয় না। মানুষে মানুষে মিলনের উৎসব যখন আসে, তখন আমাদের এটাও ভাবতে হয় যে, আমাদের দেশে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মানুষে মানুষে বৈষম্য প্রকটতর হচ্ছে। দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে বিপুলসংখ্যক মানুষ। খুবই স্বল্পসংখ্যক মানুষের হাতে পুঞ্জীভূত হয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থবিত্ত। ঈদের সর্বজনীনতার পথে এই বৈষম্য পথের কাঁটা।

ঈদ আমাদের সামষ্টিক জীবনে যে মিলন ও শুভবোধের চর্চার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে, তা সঞ্চারিত হোক সবার প্রতিদিনের জীবন যাপনে। ঈদ নিছক আনুষ্ঠানিকতা নয়, জীবনকে নবায়ন করার আহ্বান।

ঈদে প্রবাসীরা দেশে ফিরতে আকুল হয়, শহরবাসী গ্রামে ফেরায় রোমাঞ্চ পায়, একাকী মানুষ বন্ধুমহলের সঙ্গে মেলার জন্য ব্যাকুল হয়। অনেক ভোগান্তি শেষে নিজ প্রাঙ্গণে প্রিয়জনের আলিঙ্গনের সুখ উপভোগ করে। এই সুযোগ থেকে কেউ যাতে বঞ্চিত না হয়, তার জন্য সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের সর্বোচ্চ মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।

বিশ্ব মুসলিমের এই উৎসবে ধরণী সজীব হবে, যেখানেই তারা থাকবে, সেখানেই ঈদ উৎসবের পবিত্র সৌন্দর্যে অপরের মনের প্রীতি আদায় করে নেবে, এটাই কাম্য।