নিজস্ব প্রতিনিধি : প্রতিদিনের মত হাঁসের পাল নিয়ে বিলের মাঝখানে যায় ফারুক মিয়া (১৮)। সেখানে গিয়ে দেখতে পান একটি উচু মাটির টিলায় ঝোঁপের আড়ালে পড়ে রয়েছে ৯০ বছরের এক বৃদ্ধ নারী। মশা-মাছি ও কীটপতঙ্গ শরীরে ও আশপাশে ঘিরে ধরেছে। কাছে গিয়ে দেখতে পান অস্পষ্ট আ ও শব্দ করছে। পরক্ষনই প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন করেন। পরে থানা থেকে পুলিশ গিয়ে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওই নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। শনিবার দুপুরে এমন ঘটনা ঘটেছে নান্দাইল উপজেলার উত্তর মুশুলী গ্রামের ভাররা বিলে।

স্থানীয় সুত্র জানায়, ওই বিলে লোকজন কম যায়। তার উপর গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হওয়ায় এলাকার লোকজনের বিলে যাওয়া আসা অনেক কমে গেছে। এই অবস্থায় গত তিন দিন ধরে ওই নারী বিলে পড়ে ছিল। তার শরীর কঙ্কাল সার, ডান চোখের উপরে মাথার একাংশসহ বড় টিউমার। লালচে হয়ে মাংস পেন্ডির মতো ডান চোখ বের হয়ে যাচ্ছে। দাঁড়ানোর মতো ক্ষমতা নেই।

পরে ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে নান্দাইল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রুবেল হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওই নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

জরুরী সেবায় ফোন করা ব্যাক্তি রুবেল জানান, শনিবার দুপুরে তার প্রতিবেশী ফারুকের কাছ থেকে ফোন পেয়ে বিলে গিয়ে বৃদ্ধাকে দেখতে পেয়ে তাৎক্ষনিক ৯৯৯ এ ফোন করি। তখন পুলিশ এসে ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন ওই নারীকে তার পরিচয় জিজ্ঞাস করলে তিনি জানান, তাঁর ছেলে তাঁকে গত তিন দিন আগে চোখমুখ ডেকে এখানে ফেলে রেখে যায়। আসবে বলে পরে আর আসেনি।

এই বিষয়ে নান্দাইল থানার উপ-পরিদর্শক রুবেল হোসেন বলেন, তাঁর কাছেও ওই নারী ছেলে রেখে গেছে বলে জানিয়েছেন। ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে ভাররা বিলের মাঝখানে একটি ঝোঁপের আড়ল থেকে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে করি। তাঁর শরীরের অবস্থা খারাপ হওয়ায় দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

media image
ছবি

নান্দাইল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. মাহবুবুল আলম বলেন, বয়সের ভারে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ওই নারী এমনিতেই গুরুতর অসুস্থ্য। এর মধ্যে খাওয়া দাওয়া না করায় প্রেসার কমে গিয়ে শরীর খারাপ হয়ে গেছে।

নান্দাইল মডেল থানার ওসি রাশেদুজ্জামান জানান,আমরা জরুরী সেবার নাম্বারের ফোন পেয়ে এই বৃদ্ধ নারীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছি। সিআইডির সহযোগীতায় ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে বৃদ্ধার পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। সে জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। তার পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। প্রাথমিক ভাবে বৃদ্ধার কথা অনুযায়ী ধানরা করা হচ্ছে তার ছেলেই তাকে ফেলে রেখে গেছে। তবে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা গেলে সঠিক কারন জানা যাবে।