নিজস্ব প্রতিনিধি: চারদিকে মোট ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তার মধ্যবর্তী বিস্তীর্ণ কৃষি জমি। সেই কৃষি জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে মেসার্স ফাতেমা ঝিকঝাক অটো ব্রিকস নামের একটি ইটভাটা।
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ইন্দিলপুর এলাকায় এই ভাটা তৈরিতে মানা হয়নি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা। এতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি দুরত্বে অনুমোদন ছাড়াই ইটভাটা পরিচালনায় প্রশ্ন উঠেছে পরিবেশ অধিদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে।
স্থানীয়দের দাবি, বছরে একবার এসে নামে মাত্র একটা জরিমানা করেই দায়িত্ব শেষ তাদের। এ যেন জরিমানা নয়, বছর জুড়ে নির্ভীঘেœ পরিচালনার সনদ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অবৈধ এই ইটভাটার ২২০ মিটারের মধ্যে অবস্থিত তেজার কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪০০ মিটারের মধ্যে অবস্থিত ইন্দিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ইন্দিলপুর আব্দুল মজিদ উচ্চ বিদ্যালয়, ৬০০ মিটারের মধ্যে অবস্থিত ইন্দিলপুর বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১০০ মিটারের মধ্যে অবস্থিত ইন্দিলপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।
এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করে ২ হাজারের বেশি শিশু শিক্ষার্থী। এতে চরম হুমকির মুখে শিশু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা। এসব ইটভাটার নির্গত কালো ধোয়ায় চরম হুমকির মুখে পড়েছে ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামের সবুজ শ্যামল ধান ক্ষেত। ইটভাটায় জমির উপরিভাগের মাটি ব্যবহারের ফলে জমি হারাচ্ছে তার উর্বরতা। যার প্রভাব পড়ছে কৃষি উৎপাদনে। এ অবৈধ ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে বনের কাঠ পুরানোর অভিযোগও অনেক পুরাতন।
এই বিষয়ে শেরপুর পরিবেশ অধিপ্তরের সহকারি পরিচালক আল মাহমুদ বলেন, ইটভাটা স্থাপনের মতো পরিবেশ না থাকায় তাদের ছাড়পত্র দেয়া হয়নি। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইন্দিলপুর আব্দুল মজিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূর হোসেন বলেন, ইটভাটার কারণে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে। অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন হাঁপানি, এলার্জি, সর্দি-কাশিসহ বিভিন্ন রোগে। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে এই ভাটা অপসারণ দাবি করছি।
এ ব্যাপারে ইট ভাটার মালিক ফারুক হোসেন বলেন, হাতে গোনা কয়েকটি ভাটার লাইসেন্স আছে। সবাই যেভাবে চালাচ্ছে আমিও সেভাবেই চালাচ্ছি। বেশি তথ্য জানার থাকলে ইট ভাটা মালিক সমিতির সাথে কথা বলতে বলেন।
সিভিল সার্জন ডা. অনুপম ভট্টাচার্য্য বলেন, কালো ধোঁয়ার মধ্যে কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মন অক্সাইডসহ আরও ক্ষতিকর যে সমস্ত পদার্থগুলো বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য বেশি ক্ষতিকর। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইফতেখার ইউনুস বলেন, পরিদর্শন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।