পূর্বধলা সংবাদদাতা : নেত্রকোণার পূর্বধলায় গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নে রাস্তা সংস্কারের জন্য মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে স্কুল ছাত্র টিটু (১৬) হত্যা মামলার মূল আসামি রোমান তালুকদারকে(২৯) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৪। তিনি উপজেলার বুধি (পশ্চিমপাড়া) এলাকার আইয়ুব আলী তালুকদারের ছেলে।

ভুক্তভোগী স্কুলছাত্র রেজাউল ওরফে টিটু একই এলাকার মোহাম্মদ আলী ও মোছা. আয়েশা বেগম দম্পত্তির ছেলে। বাবা-মা কর্মের কারণে গাজীপুর এলাকায় থাকার সুবাধে ভুক্তভোগী তার দাদী ও বড় ভাইয়ের সাথে গ্রামের বাড়িতে থাকতেন। মজিবর রহমান টেকটিক্যাল স্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন টিটু।

ময়মনসিংহ র‌্যাব-১৪ (সদর ব্যাটালিয়ন) এর উপপরিচালক ও অপারেশনস্ অফিসার এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সোমবার ভোর ৩টার দিকে তার নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি দল রোমান তালুকদারকে ঢাকার নবাবপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে পূর্বধলা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, গত বছরের ১১ ডিসেম্বর সকালে এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি রোমানের নেতৃত্বে কাপাসিয়া রোড হতে সাত্যটি বাজারগামী কাঁচা রাস্তায় ভুক্তভোগীর গোষ্ঠীয় চাচার (জমির মালিক) অনুমতি ব্যতিত অপর আসামি মো. বিল্লাল হোসেন (৪০) তার ভেকু দিয়ে মাটি কেটে জমির ক্ষতি সাধন করা শুরু করেন। জমির মালিক বিষয়টি দেখে মাটি কাটতে বাধা নিষেধ করে নিজ বাড়িতে চলে যান।

পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভুক্তভোগী ও জমির মালিকসহ আরও পাঁচজন ঘটনাস্থলে এসে মাটি কাটতে বাধা নিষেধ করতে থাকেন। এসময় রোমান ও বিল্লাল জমির মালিকের সাথে তর্ক-বিতর্কসহ হুমকি-ধামকি দিয়ে জোরপূর্বক মাটি কাটার চেষ্টা করেন।

তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ের রোমানের বাবা আইয়ুব আলী তালুকদারের (৫৫) হুকুমে মামলা এজাহারভুক্ত অন্যান্য আসামিরা মিলে জমির মালিকসহ বাদীর লোকজনকে এলোপাথারি কিল-ঘুষি, লাথি মারতে থাকেন।

স্কুল ছাত্র টিটু তার চাচাকে উদ্ধার করতে গেলে রোমান তালুকদার ভুক্তভোগীর গেঞ্জির কলার চেপে ধরে এলোপাথারিভাবে মাথায় ও বুকে সজোরে কিল-ঘুষি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। মাটিতে পড়ে গেলে অন্যান্য এজাহারভুক্ত আসামিরা মিলে ভুক্তভোগীর বুকসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারি লাথি ও ঘুষি মারলে টিটু অজ্ঞান হয়ে পড়েন। ওইদিন বেলা ১২টার দিকে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে পূর্বধলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎক মৃত ঘোষনা করেন।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে রোমান তালুকদারকে প্রধান আসামি করে নয়জনের নাম উল্লেখ এবং আরও চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন বলে জানান র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা।