মোহনগঞ্জ সংবাদদাতা : নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে এসএসসি এক পরীক্ষার্থীকে মারধর করে প্রবেশপত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় করা মামলায় তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার দুপুরে মোহনগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. দেলোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার কমলপুর গ্রাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মো. সামিউল (১৬)। সে উপজেলার কমলপুর গ্রামের মো. সাইকুল মিয়ার ছেলে। সামিউল মোহনগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।

আর গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার কমলপুর গ্রামের শান্ত মিয়ার ছেলে অনু মিয়া (৩০), সুজন মিয়া (২৫) ও অনু মিয়ার চাচাতো ভাই রাজু মিয়া (২২)।

মামলার পাশাপাশি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) অবহিত করেছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সামিউল। মোহনগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের যৌথ উদ্যোগে ওই শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

মামলার অভিযোগ, পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার মোহনগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে বের হয় সামিউল। সোয়া ১টার দিকে মায়ের সাথে বাড়ির দিকে রওনা হয়। পথে টেংগাপাড়া এলাকায় কলেজ রোডে সামিউলের ওপর ছুরি নিয়ে হামলা চালায় অনু মিয়া ও তার চাচাতো ভাই রাজু। মারধরের এক পর্যায়ে প্রবেশপত্র কেড়ে নেয়। এক পর্যায়ে তাদের হাত থেকে ছুটে পরীক্ষা কেন্দ্রর মাঠে গিয়ে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার শুরু করে সামিউল। সেসময় ছেলের পেছন পেছন দৌড়ে মাঠে গিয়ে অজ্ঞান হয় তার মা। এ সময় কেন্দ্রে থাকা পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি সামাল দেন। পরে বিকেলে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করে সামিউল। এতে অনু মিয়া ও রাজুকে হামলার ঘটনায় আসামি করা হয়। এছাড়া সুজন মিয়াকে হামলার ঘটনায় হুকুমদাতা হিসেবে আসামি করা হয়।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা গেছে, গত ডিসেম্বরে জমি বিরোধে প্রতিক্ষের বল্লমের আঘাতে নিহত হয় অনু মিয়ার বড় ভাই সনু মিয়া। এ ঘটনায় প্রতিবেশী স্কুলছাত্র সামিউল তার বাবা সাইকুল মিয়া, চাচা তরিকুল ও শফিকুলসহ তাদের পরিবারের আটজনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় সামিউলের বাবা সাইকুল ও চাচা তরিকুল বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

সামিউলের বল্লমের আঘাতেই সনু মিয়ার মৃত্যু হয় বলে হামলাকারীদের ধারণা। এ নিয়ে তারা সামিউলের প্রতি ক্ষিপ্ত ছিল।

মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, মামলার পর অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ওই ছাত্রের পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. হাফিজা জেসমিন বলেন, মারধর ও প্রবেশপত্র ছিনতাইয়ের ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলা হয়েছে। এদিকে ওই ছাত্রের পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে কেন্দ্র সচিবকে বলা হয়েছে। এরপর নিয়মিত পরীক্ষা দিচ্ছে সামিউল।