নিজস্ব প্রতিনিধি : ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনে দ্বিতীয় বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নির্বাচন। প্রতীক পেয়ে প্রচারণার মাঠে সরব ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রার্থীরা। শুক্রবার সকালে নগরীর টাউন হলে তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রতিদ্ব›দ্ধী প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করেন নির্বাচন কমিশন। পছন্দ অনুযায়ী বরাদ্দকৃত প্রতীক নিয়ে প্রচারণার মাঠে নেমে পড়েন প্রার্থীরা।

নগরীর অলিগলিতে প্রার্থীরা তাদের প্রতীক দিয়ে পোষ্টার সাটিয়েছেন। নগরীজুড়ে চলছে প্রার্থীদের মাইকিং।

নির্বাচনকে উৎসবমুখর করতে এবার দলীয় প্রতীক দেয়নি আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে, বিএনপি নির্বাচনে না আসায় এর মধ্যে আওয়ামীলীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতীক পেয়েছেন চারজন। একমাত্র দলীয় প্রতীক নিয়ে মেয়র প্রার্থী দিয়েছে জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টি মনোনীত জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম- সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম স্বপন মন্ডল পেয়েছেন লাঙ্গল প্রতীক। নির্বাচনের মাঠে প্রতিদ্ব›দ্ধীতা করছেন পাঁচজন মেয়র প্রার্থী।

ময়মনসিংহ সিটির সদ্য সাবেক মেয়রও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু পেয়েছেন দেওয়াল গড়ি প্রতীক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব এহতেশামুল আলম পেয়েছেন ঘোড়া প্রতীক, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাদেকুল হক খান মিল্কী টজু পেয়েছেন হাতি প্রতীক, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সদস্য কৃষিবিদ ও রেজাউল হক পেয়েছেন হরিণ প্রতীক।

মেয়র প্রার্থী মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, ঘড়ি উন্নয়নের প্রতীক। সিটির উন্নয়নের অসমাপ্ত কাজ করতে নগরবাসী আবারও ঘড়ি প্রতীকে আস্থা রাখবে। বিগত পাঁচ বছরে প্রথম দিকে মহামারি করোনা ও পরে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে শতভাগ উন্নয়ন করা সম্ভব হয়নি। সাধারণ মানুষ আমার প্রতি তাদেরর সমর্থন দিলে চলমান উন্নয়ন কাজ ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পারবো। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গে রয়েছে। আশা রাখছি জয় সহজেই আসবে।

প্রতীক ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব এহতেশামুল আলম বলেন, প্রতীক হাতে পেয়েই মানুষের ধারে ধারে যাচ্ছি। আমার পক্ষে সাধারণ মানুষের বেশ সাড়া রয়েছে। কারণ বিগত সময়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি। মানুষকে সুন্দর স্মার্ট শহর উপহার দিতেই আমার প্রার্থী হওয়া।

হাতি প্রতীকের প্রার্থী শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাদেকুল হক খান মিল্কী টজু বলেন, নগরের মানুষ আকাশ দেখতে চায়, পরিচ্ছন্ন নগরীতে বসবাস করতে চায়, যানজট সমস্যার নিরসন চান। তাই তাদের দাবির প্রেক্ষিতে আমি প্রার্থী হয়েছি। পছন্দের প্রতীক হাতি পেয়েছি। মানুষ পরিবর্তনের লক্ষ্যে হাতি প্রতীকেই আস্থা রাখবে।

জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী শহীদুল ইসলাম স্বপন মন্ডল বলেন, লাঙ্গল পল্লীবন্ধু এরশাদের প্রতীক, লাঙ্গল জনগনের প্রতীক। এই প্রতীকের প্রতি মানুষের আস্থা রয়েছে। সাধারন মানুষ পরিবর্তন চায় তাই নগরীর উন্নয়নে ও পরিবর্তনের স্বার্থে নগরবাসী লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে জয়ী করবে।

প্রতীক পেয়ে মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি প্রচারণায় নেমেছেন সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা।

নয় নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী রতন সরকার পার্থ বলেন, টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীক পেয়েছি। আমি এলাকার সকলের পরিচিত মানুষ। প্রার্থী হওয়ার মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানবিক সুস্থ সমাজ গঠন করা।

৪, ৫ এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর প্রার্থী শাম্মি আক্তার মিতু বলেন, বিগত পাঁচ বছরও ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলাম। নিজের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছি। আবারও সুযোগ পেলে নিজের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে চাই।

৩৩টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৯ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৬৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্ধতা করছেন। আগামী ৯ মার্চ ইভিএম এর মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে ভোট গ্রহণ। মোট ভোটার রয়েছে ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৬জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৭২ জন, নারী ১ লাখ ৭২ হাজার ৬১৫জন এবং হিজড়া ৯জন।