ডেস্ক রিপোর্ট : প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় জমে উঠেছে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক) নির্বাচন। সেই সঙ্গে পোস্টারে ছেয়ে গেছে নগরীর অলিগলি থেকে শুরু করে হাট-বাজার ও সড়ক-মহাসড়কগুলো। নগরীর পাড়া-মহলার ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনায় ব্যস্ত প্রার্থীরা।
নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নগরীর পথে পথে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের নারী প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা গেছে। এতে বাদ যায়নি বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে দোকানপাট, হাট-বাজার ও নগরীর কাঁচা বাজারগুলোও। ফলে প্রার্থীদের বিরামহীন প্রচারণায় নগরজুড়ে নির্বাচনী উৎসবমুখর বইছে।

সিটির সদ্য সাবেক মেয়রও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মেয়র প্রার্থী মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, ঘড়ি উন্নয়নের প্রতীক। সিটির উন্নয়নের অসমাপ্ত কাজ করতে নগরবাসী আবারও ঘড়ি প্রতীকে আস্থা রাখবে। বিগত পাঁচ বছরে প্রথম দিকে মহামারি করোনা ও পরে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে শতভাগ উন্নয়ন করা সম্ভব হয়নি। সাধারণ মানুষ আমার প্রতি তাদেরর সমর্থন দিলে চলমান উন্নয়ন কাজ ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পারবো। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গে রয়েছে। আশা রাখছি জয় সহজেই আসবে।

প্রতীক ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব এহতেশামুল আলম বলেন, প্রতীক হাতে পেয়েই মানুষের ধারে ধারে যাচ্ছি। আমার পক্ষে সাধারণ মানুষের বেশ সাড়া রয়েছে। কারণ বিগত সময়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি। মানুষকে সুন্দর স্মার্ট শহর উপহার দিতেই আমার প্রার্থী হওয়া।

হাতি প্রতীকের প্রার্থী শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাদেকুল হক খান মিল্কী টজু বলেন, নগরের মানুষ আকাশ দেখতে চায়, পরিচ্ছন্ন নগরীতে বসবাস করতে চায়, যানজট সমস্যার নিরসন চান। তাই তাদের দাবির প্রেক্ষিতে আমি প্রার্থী হয়েছি। পছন্দের প্রতীক হাতি পেয়েছি। মানুষ পরিবর্তনের লক্ষ্যে হাতি প্রতীকেই আস্থা রাখবে।
এছাড়াও তিনি সম্প্রতি ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ১৫ দফা ইশতেহার ঘোষণা করে স্মার্ট নগরী গড়তে মেয়র পদে ভোট প্রার্থনা করেন।

জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী শহীদুল ইসলাম স্বপন মন্ডল বলেন, লাঙ্গল পল্লীবন্ধু এরশাদের প্রতীক, লাঙ্গল জনগনের প্রতীক। এই প্রতীকের প্রতি মানুষের আস্থা রয়েছে। এই প্রতীকেই সমর্থন দিয়ে নগরবাসী এবার চমক দেখাবে। তিনি আরো বলেন, সাধারন মানুষ পরিবর্তন চায় তাই নগরীর উন্নয়নে ও পরিবর্তনের স্বার্থে নগরবাসী লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে জয়ী করবে।
হরিণ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী কৃষিবিদ ড. রেজাউল হক বলেন, নগরীর প্রতিটি এলাকায় গনসংযোগ করছি। সাধারন মানুষের ব্যপিক সমর্থন পাচ্ছি। আশা করি ৯ মার্চ ভোটাররা হরিণ প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করবে। বিগত সময়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি। আমি নির্বাচিত হলে জনগনকে সাথে নিয়ে একটি আধুনিক, স্মার্ট ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তুলব।
তবে একাধিক ভোটার জানান, বিগত সময়ের নানা উন্নয়ন, আগামী দিনের প্রত্যাশা ও পছন্দের প্রার্থী বেছে নিবেন তারা। ভোটের মাঠে শেষ হাসি, কে হাসে তা এখন অপেক্ষার বিষয়।
অন্যদিকে, প্রতীক পেয়ে মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি ব্যাপক প্রচারণায় নেমেছেন সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা।
প্রসঙ্গত, এই নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৬ জন। এর মধ্যে এক লাখ ৬৩ হাজার ৮৩২ পুরুষ, এক লাখ ৭২ হাজার ৬৫৫ নারী। এছাড়াও তৃতীয় লিঙ্গের নয়জন ভোটার আগামী ৯ মার্চ ইভিএমে ১২৮ কেন্দ্রে ভোট প্রয়োগ করবেন।
এতে মেয়র পদে পাঁচ প্রার্থী ছাড়াও নগরের ৩৩টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৯ এবং ১১টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে প্রার্থী আছেন ৬৯ জন। তবে নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ডে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিল নির্বাচিত হওয়ায় কাউন্সিলর পদে ৩২টি ওয়ার্ডে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।