স্টাফ রিপোর্টার : জমে উঠেছে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নিবার্চন। নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন মোট ৫ প্রার্থী। এর মাঝে ৩ জন আওয়ামী লীগের ও একজন জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী নেতা। বাকি একজন ভোটারদের কাছে একেবারেই নতুন মুখ। কিন্তু ভোটারদের কাছে নতুন মুখ হলেও শিক্ষায় সবচেয়ে এগিয়ে তিনি।
মেয়র পদে প্রার্থীদের মাঝে একজন পিএইচডি, একজন বিএসসি পাশ, একজন বিএ, এলএলবি পাশ ও বাকি দুই প্রার্থী স্বশিক্ষিত। নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হলফনামায় এসব তথ্য জানা গেছে।
হলফনামার তথ্য সূত্রে আরো জানা যায়, সদ্য পদত্যাগী মেয়র মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি টেবিল ঘড়ি প্রতীকের মেয়র প্রার্থী হয়েছেন ইকরামুল হক টিটু। তিনি হলফনামায় নিজেকে বিএসসি পাশ উল্লেখ করেছেন এবং পেশা দেখিয়েছেন ব্যবসা। আর্থিক দিক থেকে তিনি অন্য প্রার্থীদের চেয়ে সবচেয়ে এগিয়ে। তার নগদ টাকা রয়েছে ১ কোটি ৬৮ লক্ষ ৫১ হাজার ৮৪২ টাকা। শেয়ার সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত থকে তার বাৎসরিক আয় ২৭ লক্ষ, ১১ হাজার ৮৪০ টাকা। স্বর্ণ রয়েছে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার। ব্যাংকে ঋণ রয়েছে ২ কোটি ৬২ লক্ষ ২২ হাজার ৩৩৪ টাকা। পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেট সহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে তার বিনিয়োগের পরিমান ১৩ লক্ষ, ১৯ হাজার ২২৫ টাকা। ইলেকট্রনিক সামগ্রী রয়েছে ৪ লক্ষ টাকার। আসবাবপত্র রয়েছে ২ লক্ষ টাকার। কৃষিজমি রয়েছে ৪৬ লক্ষ ৬০ হাজার ২৫০ টাকার। অন্যান্য খাতে ৭৫ লক্ষ, ৯৩ হাজার ৮৯২ টাকা। রাজনীতিতে জড়িত থাকলেও তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ঘোড়া প্রতীকের মেয়র প্রার্থী হয়েছেন এহতেশামুল আলম। তিনি হলফনামায় নিজেকে স্বশিক্ষিত উল্লেখ করেছেন এবং পেশা দেখিয়েছেন স্টেশনারী সামগ্রী বিক্রেতা ও গৃহ সম্পত্তি থেকে আয়। তার নগদ টাকা ৪ লক্ষ ৯৯ হাজার ৫৭০ টাকা। বাড়ি/দোকান ভাড়া থেকে তার বাৎসরিক আয় ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। ব্যবসা থেকে তার আয় বাৎসরিক ৪ লক্ষ টাকা। শেয়ার/সঞ্চয়পত্রে তার কোনো আমানত নেই। তার স্বর্ণ রয়েছে ১০ তোলা। তার গাড়ি রয়েছে ২টি। যার মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে ৬৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। ইলেকট্রনিক সামগ্রী রয়েছে ৫০ হাজার টাকার। আসবাবপত্র রয়েছে ৫০ হাজার টাকার। নিজ নামে তার ১টি ৪ তলা বাড়ি আছে। অর্জণকারীন সময়ে এর আর্থিক মূল্য ১৮ লক্ষ টাকা। কৃষি বা মৎস্য খাতে তার কোনো বিনিয়োগ নেই। ঢাকা ব্যাংক, ময়মনসিংহ শাখাতে কার লোন রয়েছে ৫৪ লক্ষ ৩৩ হাজার ৫৭০ টাকা। তার বিরুদ্ধেও কোনো মামলা নেই।
শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হাতি প্রতীকের মেয়র প্রার্থী হয়েছেন সাদেকুল হক খান মিল্কী টজু। তিনি হলফনামায় নিজেকে বিএ, এলএলবি পাশ উল্লেখ করেছেন এবং পেশা দেখিয়েছেন আইনজীবি। তার নগদ টাকা ৯৪ লক্ষ ৪১ হাজার ৮৬০ টাকা। তার রয়েছে ১০ তোলা স্বর্ণ। যা বৈবাহিক সূত্রে প্রাপ্ত। তার ব্যাংকে কোনো ঋণ নেই। বাড়ি/দোকান থেকে বাৎসরিক আয় ৯০ হাজার টাকা। পেশা থেকে বাৎসরিক আয় ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। ভূমি বিক্রয়ে আয় ৮৮ লক্ষ ৮৯ হাজার ৫২০ টাকা। ব্যাংকে জমাকৃত টাকার পরিমান ৯৭ হাজার ৬৬০ টাকা। আসবাবপত্র রয়েছে ১ লক্ষ টাকার। ইলেকট্রনিক সামগ্রী রয়েছে ১ লক্ষ টাকার। নিজ নামে ১ তলা বাড়ি রয়েছে। যা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত। কৃষি বা মৎস্য খাতে তার কোনো বিনিয়োগ নেই। সাদেকুল হক খান মিল্কী টজুর বিরুদ্ধেও কোনো মামলা নেই।
জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহবায়ক ও জেলা শ্রমিক পার্টির সভাপতি লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন শহীদুল ইসলাম স্বপন মন্ডল। তার হলফ নামায় নিজেকে স্বশিক্ষিত বলে উল্লেখ করেছেন এবং পেশা দেখিয়েছেন ব্যবসা। তার নগদ টাকা ৫ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। তার কোনো ঋণ নেই। নিজ নামে তার কোনো স্বর্ণ নেই। ব্যবসা থেকে তার বাৎসরিক আয় ৩ লক্ষ টাকা। ব্যাংকে কোনো নগদ অর্থ জমা নেই। কৃষি, অকৃষি, বা দালান, বাড়ি নেই। জাতীয় পার্টির রাজনীেিত জড়িত থাকলেও তার বিরুদ্বে কোনো মামলা নেই।
ভোটারদের কাছে একেবারেই নতুন মুখ রেজাউল হক। হরিণ প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন তিনি। কিন্তু শিক্ষায় তিনি সবচেয়ে এগিয়ে। রেজাউল হক নিজের হলফনামায় নিজেকে পিএইচডি বলে উল্লেখ করেছেন। এবং পেশা দেখিয়েছেন আইন পেশা। নিজ পেশা থেকে তার বাৎসরিক আয় ৪ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। ইলেকট্রনিক ও আসবাবপত্রের মূল তিনি অজানা বলে উল্লেখ করেছেন। তার নগদ টাকা ১৭ লক্ষ ৭৭ হাজার ২৩৩ টাকা। তার ৩০ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। যা বৈবাহিক সূত্রে পেয়েছেন। তার কোনো ঋণ নেই।