গৌরীপুর প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের গৌরীপুরে গত দুইদিনে পাগলা কুকুরের কামরে আক্রান্ত হয়েছে ২৫ জন। শনিবার বিকালে থেকে রবিবার রাত পর্যন্ত তারা কুকুরের আক্রমণের শিকার হন। এদের মধ্যে দুইজন মধ্য বয়ষ্ক নারী, বাকী সবাই ৩ থেকে ১০ বছরের শিশু। আক্রান্তদের বেশির ভাগই গৌরীপুর পৌরসভার বাসিন্দা। অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় কয়েকজনকে পাঠানো হয়েছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
গৌরীপুর প্রাণী সম্পদ হাসপাতাল বলছে পৌরসভার সহযোগিতা পেলে তাঁরা কুকুর নিধনের অভিযানে নামতে প্রস্তুত। পৌর মেয়র জানালেন- প্রতিদিন যে হারে মানুষ কুকুরের আক্রমণের শিকার হচ্ছে, বিষয়টি নিয়ে তিনি চিন্তিত।
গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকাল থেকে জরুরী বিভাগে হঠাৎ করেই কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত রোগী আসা শুরু হয় এবং ক্রমান্বয়ে তা বাড়তে থাকে।
শনিবার আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছিল- পৌর শহরের সতিষা মহল্লার নুরুল হকের মেয়ে ফাতেমা খাতুন (১০) ও জহিরুল ইসলামের মেয়ে জিনিয়া (৫)। পশ্চিম দাপুনিয়া মহল্লার পায়েল আহম্মেদের ছেলে রাফি (৫) ও জায়েদুল ইসলামের স্ত্রী রুণা আক্তার (৩০)। সাতুতী গ্রামের ফারুকের মেয়ে ঝর্ণা (৯) ও ইসমাঈল (৬)। পৌর শহরের জান্নাতুল (১৪) ও সামান্থা (৭), মইলাকান্দা ইউনিয়নের কাউরাট গ্রামের বাবুলের স্ত্রী রুণা (৩২)।
রবিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চিকিৎসা নিতে আসে- পৌর শহরের মধ্য বাজার মহল্লার সাধন পালের স্ত্রী অঞ্জণা, শহিদুল্লাহর ছেলে আরিয়ান (৪), বেকারকান্দা গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে সিয়াম (৩), জায়ান (৫), পৌর শহরের ঘোষপাড়া মহল্লার সুমনের ছেলে সাঈম (৮), সরকারপাড়া মহল্লার চয়ন সরকারের ছেলে কৃঞ্চ, লিটনের অরণ্য (৭), আনোয়ারের ছেলে রফিক (৬), শুভর ছেলে শিমুল (৬)। এছাড়া পৌর শহরের বালুয়ারাপাড়া মহল্লার তিনজন, সতিষা মহল্লার দুই শিশু, শালিহর গ্রামের দুইজনকে কুকুরে কামড়ানোর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় অর্ধশত ছাগল ও হাঁস-মুরগি কুকুরের আক্রমণের শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে।
গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রাজেন্দ্র দেবনাথ জানান- কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। আক্রান্তদের বেশির ভাগই শিশু। তাঁরা জলাতঙ্কের ঝুঁকিতে রয়েছে। কুকুরগুলোকে নিধন না করলে এর হার দিন দিন বাড়তেই থাকবে।
গৌরীপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডক্টর হারুন অর রশিদ জানান- ধারণা করা হচ্ছে কুকুরগুলো অসুস্থ। এসব কুকুরের কামড়ে জলাতঙ্কের আশংকা অনেক বেশি। পৌরসভার সহযোগিতা পেলে আমরা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত আছি।
গৌরীপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম জানান- বিষয়টি নিয়ে তিনি খুবই চিন্তিত, পৌর শহরেই মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এ ব্যাপারে শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ শাকিল আহমেদ জানান- হঠাৎ করে ব্যাপকভাবে কুকুরের আক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় তিনি খুবই উদ্ধিগ্ন। ইতিমধ্যে প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ও পৌরসভার মেয়রের সাথে বিষয়টি নিয়ে তিনি কথা বলেছেন।