নিজস্ব প্রতিনিধি : ভোটারদের অপেক্ষার প্রহর শেষ। আগামীকাল পছন্দের প্রার্থী বেছে নেবেন ময়মনসিংহ নগরীর বাসিন্দারা। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর আজ তারা নিজেদের ভোট প্রযোগের মাধ্যমে আগামী দিনের জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবেন।

শনিবার (৯ মার্চ) ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস। কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে ইভিএম মেশিনসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম। শুক্রবার সকাল এগারোটা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত নগরীর সার্কিট হাউজ সংলগ্ন জিনমেশিয়ামে অবস্থিত ৭টি বুথ থেকে ১২৮টি কেন্দ্রের নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়েছে। ৩৩টি ওয়ার্ডের জন্য ১৩৪ জন প্রিজাইডিং অফিসার এসব সরঞ্জাম গ্রহণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে এসব সরঞ্জাম কেন্দ্রে নিয়ে যায়।

রিটানিং অফিসার ও ময়মনসিংহ আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন চৌধুরী জানান, শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে বিকেল চারটা পর্যন্ত ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে দেড়গুণ ইভিএম মেশিন থাকবে৷ এছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে প্রতিটি কেন্দ্রে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গঠন করা হয়েছে। এতে স্ট্রাইকিং ফোর্সের পাশাপাশি ৭ প্লাটুন বিজিবি, ১১ প্লাটুন পুলিশ, আর্মড পুলিশ এবং আনসার সদস্য, র‌্যাবের ১৭টি টিম ছাড়াও ৩৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ১১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।

তিনি আরও বলেন, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ৪ জন পুলিশ ও ১২ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে ৫ জন পুলিশ ও ১২ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।

ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার পুলিশ সুপার মাছুম আহমেদ ভূঞা বলেন, ১শত ২৮টি কেন্দ্রকে অতিগুরুত্বপূর্ন কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করে অধিকতর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। ভোটারদের নিরাপদে ভোট প্রদানে পুলিশ, এপিবিএন, বিজিবি, আনসার, স্ট্রাইকিং ফোর্সসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সার্বক্ষনিক মোতায়েন থাকবে।

নির্বাচনে ৫ মেয়র প্রার্থীরা হলেন, ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু (ঘড়ি), ময়মনসিংহ সিটি আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান উপদেষ্ঠা অ্যাডভোকেট সাদেকুল হক খান মিল্কি টজু (হাতি), ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেসামুল আলম (ঘোড়া), কৃষিবিদ ড. রেজাউল হক রেজা (হরিণ) ও জাতীয় পার্টির শহীদুল ইসলাম স্বপন মন্ডল (লাঙ্গল)।

এছাড়াও ৩৩টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর ১৪৯ এবং ১১টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৬৯ জন নির্বাচন করছেন। তবে ১১ নং ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সির পদে কোন প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় মো. ফরহাদ আলম বেসকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লক্ষ ৬৩ হাজার ৮৩২ জন আর মহিলা ১ লক্ষ ৭২ হাজার ৬৫৫ জন এবং হিজরা ৯ জন।

উল্লেখ্য, তফসিল ঘোষণার পর থেকে মিছিল, শোডাউন, গণসংযোগ ও সমাবেশসহ প্রচারে থাকা প্রার্থীরা ভোট প্রার্থনা ও দোয়া চেয়েছেন। নানা ছক কষে ওয়ার্ড, পাড়া ও মহল্লা থেকে শুরু করে পরিবার ও ঘরে ঘরে যাওয়ার চেষ্টা করেছে প্রার্থীরা। এলাকার উন্নয়ন ও সমস্যার সমাধানসহ দিয়েছেন নানা প্রতিশ্রুতি।

প্রার্থীরা জানান, ভোটারদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া মিলেছে। জয়ের ব্যাপারে সবাই শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

ভোটাররা জানান প্রত্যেক প্রার্থীই একাধিকবার তাদের কাছে ভোট চাইতে এসেছেন। বিচার বিবেচনায় এদের মধ্যে যাদের যোগ্য ও ভালো মনে করবেন এবং আস্থা রাখা যায় এমন প্রার্থীকেই তারা ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। একই সাথে স্থানীয় ভোটাররা চান সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ।