ধোবাউড়া প্রতিনিধি ; ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় চোরাই পথে আসা ভারতীয় চিনি ব্যবসাকে কেন্দ্র করে লাইক মিয়া(২৬) নামে এক যুবক খুন হয়েছে।
উপজেলার গোয়াতলা ইউনিয়নের গোয়াতলা বাজারে শুক্রবার রাত আনুমানিক দশটায় এই ঘটনা ঘটেছে।নিহত লাইক মিয়া পাতালগাও গ্রামের আঃ হাই এর ছেলে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, গোয়াতলা এলাকার আক্তার হোসেন, মান্নান, হান্নান, রমজান, রেনুসহ অনেকে চোরাকারবারীর মাধ্যমে ভারতীয় চিনির ব্যবসা করে আসছে। কিছুদিন পূর্বে আক্তারের চিনির গাড়ি গোয়াতলা বাজারে প্রবেশ করলে রাস্তায় গাড়ি আটকিয়ে বাধা সৃষ্টি করে আঃ হাই এর ছেলে লাইক মিয়া ও তার লোকজন। এই বিষয় নিয়ে তাদের মাঝে দ্বন্ধ চলছিল।
এরই জের ধরে শুক্রবার রাত আনুমানিক দশটায় একটি চায়ের দোকান থেকে বাচ্চু মিয়ার ছেলে শাহজাহান লাইক মিয়াকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে গোয়াতলা বাসস্টেশনের পশ্চিম পাশে মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় রাস্তার উপরে ফুটকাই গ্রামের মজিবরের ছেলে সুমন এবং গোবিন্দপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে লালচানসহ আরও তাদের লোকজন নিয়ে লাইক মিয়াকে ছুরিকাঘাত করে। এসময় গুরুত্বর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ধোবাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে ময়মনসিংহ মেডিকেলে নেওয়া হয়। মধ্যরাতে লাইক মিয়ার মৃত্যু হয়।
অন্যদিকে, নিহত লাইক মিয়ার পরিবারের দাবি অবৈধভাবে চিনি ব্যবসার লাইন ক্লিয়ার করতেই লাইক মিয়াকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহতের বড় ভাই জজ মিয়া জানায়, যারা গোয়াতলা বাজারে অবৈধভাবে চিনির ব্যবসা করে তারাই পরিকল্পিতভাবে লাইক মিয়াকে হত্যা করেছে।
ধোবাউড়া থানার অফিসার ইনচাজ চান মিয়া বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা তিনজনকে আটক করেছি। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
উল্লেখ্য, গত কয়েকমাস ধরে ধোবাউাড়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চোরাকারবারীরা। দক্ষিন মাইজপাড়া, কলসিন্দুর, রনসিংহপুর, ঘোষগাও, মুন্সিরহাটসহ সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে অন্তত ৫০ জন চোরাকারবারী সক্রিয় রয়েছে। ভারতীয় চিনিসহ বিভিন্ন পন্য ভারত থেকে প্রকাশ্যে দিবালোকে পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে এই চক্রটি। এসব পণ্যের আড়ালে পাচার হচ্ছে মাদকও। তাদের রয়েছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এসব বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে চোরাকারীদের তোপের মুখে পড়তে হয়। তাই ভয়ে কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলেনা। চোরাকারীরাই যেন এলাকার নিয়ন্ত্রক।
চোরাকারবারীদের বিষয়ে গত ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। কমিটির অনেক সদস্যই চোরাকারবারীদের নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত শারমিন বলেন, চোরাচালানের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ধোবাউড়া থানা এবং বিজিবিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।