অনলাইন ডেস্ক : ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্র“পের বিরোধে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। দুই দিনে তিন দফা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসময় লুটপাট, গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগও উঠেছে।
শনিবার (৩০ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর কলেজরোড ও মীরবাড়ী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আনন্দমোহন কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শেখ সজল বলেন, শুক্রবার (২৯ মার্চ) আনন্দ মোহন কলেজের পল্লী কবি জসীম উদ্দিন হলের ছেলেদের মধ্যে একটু ঝামেলা হয়েছিল। ওই ঘটনার জের ধরে শনিবার (৩০ মার্চ) নাজমুলের নেতৃত্বে রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমার বাসার দরজা, জানালা, গেইট ব্যাপক ভাঙচুর করে। একইসঙ্গে আমার একটি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এ সময় নাজমুল ও তার লোকজন গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটায়।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা শেখ সজলের দোকান ও তাদের বাড়িতে হামলা করেন নাজমুল ও তার লোকজন। তবে কোনো গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা হয়নি বা কেউ আহত হয়নি।
এ বিষয়ে আনন্দমোহন ছাত্রলীগের কর্মী নাজমুল বলেন, আনন্দমোহন কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শেখ সজল বহিরাগত অজ্ঞাতনামা ৩৫-৪০ জনকে নিয়ে প্রায়ই আবাসিক হলে এসে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করার চেষ্টা করতেন। আমিসহ আবাসিক হলে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের এসব অপকর্মে বাধা দিলে তাদের সঙ্গে শত্র“তার সৃষ্টি হয়।
এসব বিরোধের জেরে গত শুক্রবার (২৯ মার্চ) বিকেল ৪টার দিকে অন্তত ৩৫-৪০ জন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আনন্দমোহন কলেজের পল্লী কবি জসীম উদ্দিন আবাসিক হলের ৩০৫ নম্বর রুমে প্রবেশ করে আমার সহপাঠী জুয়েল হাসান, নাজমুল হাসান ও নাঈমকে পেয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন।
আমার সহপাঠী জুয়েল হাসান এসবের প্রতিবাদ করলে তাকে মারপিট করে। একপর্যায়ে চাকু দিয়া জুয়েল হাসানকে হত্যার উদ্দেশ্যে বামচোখ লক্ষ্য করে ছুরিকাঘাত করেন। এতে সে রক্তাক্ত জখম হয়। পরে তার চিৎকারে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে তারা চলে যায়।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে ওইদিন বিকেল সোয়া ৫টার দিকে হলে প্রবেশ করে আমার কক্ষের এক লাখ টাকার জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। এ সময় মইনুল ইসলাম ঢালী বাধা দিতে গেলে চাপাতি দিয়ে কোপ দেয়। কোপ ফেরাতে গেলে তার ডান চোখের উপরে লেগে গুরুতর আহত হয়। এছাড়া মুরাদ নামে আরও একজনকে কুপিয়ে ডান হাতের আঙুল কেটে ফেলে। এতে অজ্ঞাত আরও একজন আহত হয়।
ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল দাবি করেন, শনিবার রাতে আমি ক্যাম্পাসে ছিলাম না। এই হামলা বা ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে আমার বা আমাদের কোনোন সম্পৃক্ততা নেই। মামলা থেকে বাঁচতে এটা তাদের সাজানো নাটক।
ওসি মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন বলেন, শুক্রবারের ঘটনায় নাজমুল বাদী হয়ে আনন্দমোহন কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শেখ সজলসহ ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।