নেত্রকোণা প্রতিনিধি : চাকুরি দেবেন বলে টাকা নিয়েছিলেন নেত্রকোণার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক। কিন্তু চাকুরি তো হলোই না, শেষে হাতিয়ে নেয়া টাকাও ফেরত দেননি ওই শিক্ষক।

দীর্ঘদিন টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়েও না দেয়ায় বাধ্য হয়ে মামলা করেন ভুক্তভোগী আল আমিন (২৬) নামের এক যুবক।

রোববার আদালতে মামলার হাজিরা দিতে গেলে বিচারক অভিযুক্ত শিক্ষক এসএম সাজ্জাদুল হক সবুজকে (৫৫) কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

সাজ্জাদুল হক বারহাট্টা উপজেলার আশিয়ল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। আর ভুক্তভোগী আল আমিন একই উপজেলার বিক্রমশ্রী গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদুল হক ও আল আমিন পূর্ব পরিচিত। গত এক বছর আগে নেত্রকোণায় শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে গাড়িচালক পদে আবেদন করেন আল আমিন। চাকুরি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে সাজ্জাদুল হক আল আমিনের কাছ থেকে ঘুষ বাবদ ৫ লাখ টাকা নেন। কিন্তু চাকুরি না হওয়ায় শর্ত অনুযায়ী টাকা ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি দেননি। এ নিয়ে আল আমিন গত ২৭ ডিসেম্বর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু প্রতিকার না পেয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি নেত্রকোনার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন আল আমিন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ওই দিন সাজ্জাদুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জরি করেন। পরে সাজ্জাদুল হক উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন গ্রহণ করেন। গতকাল রোববার নেত্রকোণা আদালতে হাজিরা দিতে গেলে আদালত তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলার বাদীর আইনজীবী মীর্জা হুমায়ুন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘অভিযুক্ত এসএম সাজ্জাদুল হক এর আগে উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন নিয়েছিলেন। জামিনের শর্তানুযায়ী রোববার নেত্রকোণা চীফ জুডিশিয়াল আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’

বাদী আল আমিন বলেন, ‘সাজ্জাদুল হককে এলাকার অনেকের সামনে টাকা দিয়েছি। চাকরি না হলে টাকা ফেরত দেবেন বলেছিলেন। এখন চাকরিও হয়নি, টাকাও দিচ্ছেন না। তাই তার বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আশা করছি ন্যায় বিচার পাব।

বারহাট্টা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘একটি মামলায় প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদুলকে আদালত কারাগারে পাঠিয়েছেন বলে খবর পেয়েছি। গ্রেফতারের বিষয়ে আদালতের কাগজপত্র পাওয়ার পর নিয়মানুযায়ী তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হবে।’

উল্লেখ্য- দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গত ৬ ডিসেম্বর নেত্রকোনা-২ (সদর-বারহাট্টা) আসনের ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থীর সভায় হাজির হয়ে ওই প্রার্থীর পক্ষে ভোট চান শিক্ষক সাজ্জাদুল হক। তাঁর বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদ পারভেজ। পরে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে শিক্ষা বিভাগ।