ভালুকা প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের ভালুকা পৌর এলাকায় অবস্থিত মোহাম্মদীয়া মডেল হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় ফাতেমা (দুইদিন) নামে এক নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় গত ৬মে দৈনিক সবুজ পত্রিকায় ‘ চিকিৎসকের অবহেলায় ভালুকা নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের প্রেক্ষিতে জেলা সিভিল সার্জন একজন শিশু কনসালটেন্টকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

জানা যায়, গত ৩০ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে ভালুকা পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডের আইনাল হকের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রিতু আক্তারের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডের মহাসড়ক সংলগ্ন সালাহ উদ্দিন প্লাজায় অবস্থিত মোহাম্মদীয়া মডেল হাসপাতালে নিয়ে যান। ওই হাসপাতালের মালিক আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী গাইনি ডা. রোকেয়া আক্তার রিতুকে দেখে অনাগত সন্তান ও মায়ের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বলে ওই রাতেই ৩০হাজার টাকা চুক্তিতে দ্রুত সিজারিয়ান অপারেশনের পরামর্শ দেন। গর্ভবতী মায়ের সন্তান প্রসবের একমাস পূর্বেই সিজারিয়ান অপারেশনের চুক্তি করে ওই দিন রাতে ভালুকা সরকারী হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা.সুলতান ফজলে রাব্বী (নাহিদ) রোগীকে অজ্ঞান করেন এবং ডা. রোকাইয়া আক্তার সিজারিয়ান অপারেশন করেন। সন্তান প্রসবের পরপরই শিশু চিকিৎসক ডা.শরমিলা আক্তার নবজাতকের শারীরিক সমস্যার কথা বলে তড়িগড়ি করে ময়মনসিংহের চুরখাই কমিউনিটি বেস্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতলে প্রেরণ করেন। ওই হাসপাতালে ভর্তি করার পর বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকালে নবজাতক মারা যায়। নিহত নবজাতকের নানী নারগীস আক্তার জানান, মোহাম্মদীয়া হাসপাতালে তার মেয়ে রিতুকে ৩০ হাজার টাকায় সিজারিয়ান অপারেশন করা হলেও ডাক্তারের অবহেলায় তার নবজাতক নাতি ফাতেমা মারা যায়।

ওই ঘটনায় জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার নজরুল ইসলামের নির্দেশে গত ৬মে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রধান হলেন, ভালুকা ৫০ শয্যা সরকারী হাসপাতালের শিশু কনসালটেন্ট ডা.আমিনুল ইসলাম, আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. তাসলিমা আক্তার ও একই হাসপাতালের গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার শুকলা দে। কমিটি এক সপ্তাহের মধ্যে জেলা সিভিল সার্জনের কাছে রিপোর্ট প্রদানের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

উপজেলা স্যানেটারি ইন্সপেক্টর মো: মিজানুর রহমান জানান, কমিটির প্রধান তাকে নিহত নবজাতকের পরিবারের বাড়ির খোঁজ খবর নিতে বলেছেন।

তদন্ত কমিটির প্রধান ভালুকা ৫০ শয্যা সরকারী হাসপাতালের শিশু কনসালটেন্ট ডা.আমিনুল ইসলাম জানান, মোহাম্মদীয়া মডেল হাসপাতালে নবজাকত মৃত্যু ঘটনায় গত রোববার (১০ মে) তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে এবং তারা তদন্ত কাজ শুরু করেছেন। উপজেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টরকে দিয়ে খোঁজ খবর নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি কারো সাথে কথা বলবেন না।

ভালুকা সরকারী হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ হাসানুল হোসেন জানান, মোহাম্মদীয়া মডেল হাসপাতালে নবজাতক মৃত্যু ঘটনায় একজন শিশু বিশেষজ্ঞকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন।

ময়মনসিংহ জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার নজরুল ইসলাম জানান, ভালুকার মোহাম্মদীয়া মডেল হাসপাতালে এক প্রসূতির সিজিারিয়ান অপারশেনের পর নবজতক মৃত্যু ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং ৭ কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট পদানের জন্য ওই কমিটিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।