কলমাকান্দা প্রতিনিধি: নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় এক গৃহবধূকে নির্যাতনের পর মাথার চুল কেটে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ননদ ও ননদের স্বামী,দেবর, শশুরসহ তাদের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনাটি গত সোমবার বাদ মাগরিব উপজেলার পোগলা ইউনিয়নের কুঁতিগাও গ্রামে। ভুক্তভোগী গৃহবধূ শিখা আক্তার শিল্পী (৩৬) ওই গ্রামের মৎস ব্যবসায়ী মো. ফজলুল হক এর স্ত্রী।

অভিযুক্তরা হলেন, একই গ্রামের পাশ্ববর্তী ননদ রেশমা (২০) ও ননদের স্বামী মো.নয়ন মিয়া (২৬), দেবর মো. কাজল মিয়া (২২), মো. সাজল মিয়া (২০) ও শশুর মো. জালাল মিয়া (৬৫)।

ভুক্তভোগী শিখা আক্তার শিল্পী বলেন, ঘটনার সময় আমাদের বাড়ীতে নিজ ঘরে আমি ছাড়া কেউই ছিল না। মাগরিব নামায শেষে জায়নামাজে তসবিহ পাঠ করছিলাম। এসময় ননদ ও ননদের স্বামী, দেবর, শশুরসহ তারা ঘরে ঢুকে আমাকে এলোপাতাড়ি পিটাতে থাকে ! আমি চিৎকার করতে চাইলে আমার মুখ বেঁধে ফেলে , তখন আর চিৎকার করতে পারছিলাম না , তখন আমি গুঙিয়ে গুঙিয়ে কাঁদতে থাকি। আমার মাথার চুলের মুটি ধরে টেনে হিচড়ে পৈশাচিক উল্লাসে ওরা আমার পড়নের কাপড় খুলে মাথার চুল কেটে ঘরের ভেতরেই বিকৃত উল্লাসে অট্টহাসিতে মেতে ওঠে। তাদেরই চেচামেচিতে আশপাশের প্রতিবেশীরা দৌড়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে কলমাকান্দা হাসপাতালে নিয়ে আসে।

এ বিষয়ে শিল্পীর স্বামী মো. ফজলুল হকের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার বোন রেশমার প্রেম গঠিত বিয়ে নয়নের সাথে মেনে না নেওয়ার কারণে আমরা বাড়িতে না থাকায় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত সোমবার মাগরিব নামাযের সময় অতর্কিত ঘরে ঢুকে মারপিট করে গুরুতর আহত করেন। এসময় ঘরে থাকা নগদ টাকা স্বর্ণঅলংকারসহ আমার স্ত্রী মাথার চুল কেটে নিয়ে যায় তারা। আমি এর ন্যায় বিচার চাই।

ভুক্তভোগী শিল্পীর পিতা আব্দুল কুদ্দুছ জানান, আমার মেয়েকে ঘরে একা পেয়ে এমন নির্মম অপমান অপদস্ত করে মেরেছে আমি এর বিচার চাই, আমরা আইনের আশ্রয় নিবো, অভিযোগ দিবো।

অভিযুক্ত ননদ রেশমার স্বামী মো. নয়ন মিয়া ও শশুর মো. জালাল মিয়া অস্বীকার করে বলেন, এ ঘটনার কিছুই জানিনা। আমরা বাড়িতে ছিলাম না।

এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার কলমাকান্দা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সৌরভ ঘোষের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আহত অবস্থায় শিখা আক্তার শিল্পীকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভর্তি দেই। তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। সে এখন চিকিৎসাধীন রয়েছে হাসপাতালে।

এ বিষয়ে কলমাকান্দা থানার ওসি মোহাম্মদ লুৎফুল হক বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে ভুক্তভোগী শিখা আক্তার শিল্পীর স্বামী মো. ফজলুল হক বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।