নিজস্ব প্রতিবেদক: শেরপুরের নকলার নারায়নখোলা এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের নদের পাড়ের মানুষের বশতবাড়ীসহ ফসলি জমি রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের চলছে বাধঁ নির্মাণের কাজ। কাজটি করছেন রংপুরের ইউনাইটেট ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বাহির থেকে বালু এনে জিও ব্যাগের মাধ্যমে বাধঁ নির্মাণ করা করার কথা থাকলেও নির্মাণাধীন বাঁধের অপর পাশ থেকে নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে সেই বালু বাঁধ নির্মাণের কাজ করার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দুই বছর আগে একই জায়গাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগের মাধ্যমে বাঁধ নির্মাণ করেছিল। ঠিক অপরপাশে নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন ও নদীতে পানির প্রবল স্রোতের কারনে বাঁধ ভেঙ্গে যায়। এবার নদীতে তেমন কোন স্রোত নেই। কিন্তু পাশের ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করার কারনে গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। বাধঁ ভেঙ্গে আবার সেই গর্ত ভরাট হচ্ছে। নদী পাড়ের মানুষের বশতবাড়ীসহ ফসলী জমি যেকোন মূহুর্তে আবারো চলে যেতে পারে নদী গর্ভে।
উপজেলা প্রশাসন নদীতে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে বারবার নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরেও রাতের আধারে ও ভোরে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করতে দেখা যাচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের। সেই বালু দেওয়া হচ্ছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। সোমবার (৩ জুন) সকালে সরেজমিনে দেখা যায় নদীতে অবৈধ ড্রেজার। উত্তোলন করা হচ্ছিল বাধঁ নির্মাণের বালু।
চরঅষ্টধর ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারি কর্মকর্তা (নায়েব) মো. উজ্জল মিয়া জানান, সকালে সংবাদ পাই ব্রক্ষ্মপুত্র নদীতে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। সাথে সাথে সেটা বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু রাতের আধারে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে আবার ভোর সকালে নদী থেকে ড্রেজার উঠিয়ে ফেলে। তবে আজকে বন্ধ করা হয়েছে এবং সাথে সাথে ইউএনও স্যারকে জানানো হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারি প্রকৌশলী জিয়াউল রহমান বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বালু কোথা থেকে এনে জিও ব্যাগে দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করবে সেটা তাদের বিষয়। কাজে কোন অনিয়ম থাকলে সেটা আমাদের দেখার বিষয়। আমরা সার্বক্ষনিক মনিটরিং করতেছি। তবে একাধীকবার যোগাযোগ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন বলেন, নারায়নখোলা এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর পাওয়ার সাথে সাথে বন্ধ করা হয়েছে এবং নদী থেকে ড্রেজার সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর পরেও যদি নদীতে ড্রেজার পাওয়া যায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোপূর্বে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ নিয়মিত মামলাও দায়ের করা হয়েছে।