গৌরীপুর প্রতিনিধি : ২০০ শতক জমির পাকা ধান মাঠেই নষ্ট হয়ে গেছে পূর্ব শত্রুতায়। পাকা ধান কাটতে গেলে প্রতিপক্ষের বাঁধার মুখে মাঠে রেখেই চলে আসেন তাঁরা। তারপর নানা দেনদরবার করেও সে ধান আর কাটা যায়নি।

শেষে জমিতেই তার সলিল সমাধি ঘটে ঝড়-বৃষ্টিতে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের পাঁচাশি গ্রামে।

এ ব্যাপারে গৌরীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন পার্শ্ববর্তী ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ভুক্তভোগী উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা (সাময়িক বরখাস্ত) পাঁচাশি গ্রামের আল মামুন রাজিব।

ভুক্তভোগী রাজিবের সাথে কথা বলে জানা যায়, একই গ্রামের মোঃ সিদ্দিক খা গংদের সাথে তাদের প্রায় ১৫ বছর যাবত পারিবারিক বিরোধ। দুই পরিবারের এ দ্বন্দ্ব এখন দুই গোত্রের মাঝেও সৃষ্টি করেছে দীর্ঘস্থায়ী শত্রুতার। যার প্রেক্ষিতে গতবছর তাঁর চাচাতো ভাই সাজ্জাদুল হক খুন হয়েছেন প্রতিপক্ষের হাতে। গত ১৫ বছর যাবত দুই গোত্রের মাঝে চলছে জমি দখল, হামলা, মামলা ও অগ্নি সংযোগের মতো ঘটনা।

গত বোরো মৌসুমে ২০০ শতক জমিতে ধান চাষ করেছিলেন রাজিব। পাকা ধান যখন তিনি কাটতে জমিতে যান তখন দেশিয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা করে সিদ্দিক খার লোকজন। অনেক দেন-দরবার করেও সেই ধান আর কাটতে পারেননি রাজিব। ২০০ শতক জমির সম্পূর্ণ ধান মাঠেই নষ্ট হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

পাঁচাশি গ্রামের বাসিন্দা মোঃ আবুল কালাম ওরফে কালা মিয়া (৬৫) বলেন- দীর্ঘদিন যাবত জমিগুলো অনাবাদি হয়ে আছে। এবার বোরো ধান লাগানোর পর সিদ্দিক খা পাকা ধান কাটতে দেয়নি, সেই ধান মাঠেই নষ্ট হয়ে গেছে।

রামগোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল আমিন জনি বলেন- দুই পরিবারের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। আমরা চেষ্টা করেছিলাম যাতে ফসলের জমিটা পতিত না থাকে, কিন্তু সিদ্দিক গং কোন কিছুই মানতে রাজি নয়, তাদের কারণে ২০০ শতক জমির ধান মাঠে নষ্ট হয়ে গেছে এবার।

অভিযোগ অস্বীকার করে সিদ্দিক খা বলেন- দীর্ঘদিন প্রেম করে ২০০৯ সালে আমার মেয়েকে বিয়ে করেছিল রাজিব, মাত্র দুই মাস পর ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছে। সে আমার মেয়ের সাথে প্রতারণা করেছে, জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছে। ডিভোর্সের পর মেয়ের নামে ৮০ শতক জমি লিখে দেয়ার কথা থাকলেও, আজও তা দেয়নি। আমরা তার জমির ধান কাটতে বাঁধা দেইনি, আমাদের জমির উপর দিয়ে যেতে নিষেধ করেছি।

গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন চন্দ্র রায় বলেন- দুই পরিবারের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের, সিদ্দিক খা উনার জমির উপর দিয়ে যেতে রাজিবদের নিষেধ করেছেন। বিকল্প কোন পথ না থাকায় তাঁরা ধান কাটতে পারেনি, পরে ঝড় ও বৃষ্টিতে তা নষ্ট হয়ে গেছে।