ভালুকা প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের ভালুকায় বয়স জালিয়াতি করে অবৈধভাবে বেতন ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে উপজেলার কৈয়াদী রহমানিয়া দাখিল মাদরাসার এবতেদায়ী ক্বারী শিক্ষক মোঃ আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে। তাঁর ইনডেক্স নম্বর- ডি-০৫৭৯২৩। ওই ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাছে মুহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মোঃ আব্দুল কাদের উপজেলার কৈয়াদী রহমানিয়া দাখিল মাদরাসায় এলমে ক্বেরাত সার্টিফিকেটে এবতেদায়ী ক্বারী শিক্ষক হিসেবে ৫ জানুয়ারী ১৯৮৪ সালে যোগদান করেন। তখন তার সার্টিফিকেটে জন্ম তারিখ ছিলো ৩ আগস্ট ১৯৫৯। সেই হিসেবে তার চাকরি শেষ হওয়ার কথা ২০১৮ সালে। পরবর্তিতে তিনি মাদ্রাসায় কর্মরত অবস্থায় দাখিল মুজাব্বিত পরীক্ষা দিয়ে সনদ অর্জন করে মাদরাসায় জমা দেন। দ্বিতীয় সার্টিফিকেটে তাঁর জন্ম তারিখ ১ মার্চ ১৯৭৩। দ্বিতীয় সার্টিফিকেট এবং যোগদান তারিখের হিসেবে ওই সময় তার বয়স ছিলো ১০ বছর ১০ মাস ৪ দিন। এদিকে, বিষয়টি জানাজানি হলে মাদরাসা প্রতিষ্ঠা পরিবারের পক্ষে স্থানীয় মুহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি ওই শিক্ষকের এমপিও কর্তন ও ওই শিক্ষক কর্তৃক উত্তোলিত অতিরিক্ত অর্থ সরকারী কোষাগারে ফেরৎ দেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অভিযোগ করেন।
অভিযোগকারী মুহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বলেন, এলমে ক্বেরাত সার্টিফিকের জন্ম তারিখ অনুসারে কৈয়াদী রহমানিয়া দাখিল মাদরাসার এবতেদায়ী ক্বারী শিক্ষক মোঃ আব্দুল কাদেরের চাকরি ২০১৮ সালে শেষ হওয়ার কথা। অথচ তিনি এখনো একই পদে দাখিল মুজাব্বিত সনদে শিক্ষকতা করছেন এবং দাখিল মুজাব্বিত সনদ অনুসারে ওই মাদরাসায় যোগদানের সময় বয়স ১০ বছর ১০মাস ০৪ দিন। তার দাবি, সকল সরকারী-বেসরকারী চাকরির সর্বনিন্ম বয়স হতে হয় ১৮ বছর। পাশাপাশি তিনি বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
অভিযুক্ত শিক্ষক শিক্ষক মোঃ আবদুল কাদের জানান, এবিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না সুপার সাহেব বলতে পারবেন।
মাদরাসার সুপার মনিরুজ্জমান বলেন, ‘ঘটনাটি মাদরাসায় আমার যোগদানের আগের। কিছুদিন আগে বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি।’
মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সদ্যবিদায়ী সভাপতি এসএম আজহারুল ইসলাম জানান, বিষয়টি জানার পর তিনি ওই শিক্ষকের বেতন বন্ধ রাখার প্রস্তাব করে ছিলেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ঝিল্লুর রহমান রহমান জানান, তিনি কৈয়াদী রহমানিয়া দাখিল মাদরাসার একটি অভিযোগ তদন্ত করছেন। তদন্ত শেষে রিপোর্ট দেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলীনূর খান জানান, কৈয়াদী রহমানিয়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে সভাপতির নেওয়া ব্যবস্থা নিয়ম মাফিক হয়নি। তাই তার বেতন দিয়ে দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাকে যদি সরকারী বেতন-ভাতা বেশি দেওয়া হয়ে থাকে তাহলে নিয়ম মাফিক তা উদ্ধার করে সরকারী কোষাগারে জমা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।