মোহনগঞ্জ সংবাদদাতা : নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের ৩ নং তেতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ব্যবহৃত ব্যাটারি চালিত নষ্ট অ্যাম্বুলেন্সের ব্যাটারি খুলে বাজারে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে থাকা সৌর ল্যামপোস্টের ব্যাটারি ও অ্যাম্বুলেন্সের ব্যাটারি বিক্রির অভিযোগও রয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম চৌধুরী জহরের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে গত বুধবার (৩ জুলাই) মোহনগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে উক্ত ইউনিয়নের এক নং ওয়ার্ডের মেম্বার জুয়েল মিয়া লিখিত অভিযোগ করেছেন।

রোববার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেজওয়ানা কবির অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন একজন কর্মকর্তাকে তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এখনো তদন্তে রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৪-৫ বছর আগে এলজিএসপি প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয়ে ইউনিয়ন পরিষদের জন্য একটি ব্যাটারি চালিত অ্যাম্বুলেন্স ক্রয় করা হয়। এটি মূলত পরিপাটি একটি ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা। রোগী পরিবহনের জন্য ভেতরের সিট অ্যাম্বুলেন্সের মতো। ইউনিয়নের দরিদ্র ও শঙ্কটাপন্ন রোগীদের দ্রুত উপজেলা সদরে নেওয়ার জন্যই এটি কেনা হয়েছিল। কয়েক বছর অ্যাম্বুলেন্সটি রোগীদের সেবায় ব্যবহৃত হয়েছে। বছর দেড়েক যাবত নানা কারণে সেটি বন্ধ রয়েছে। তবে এক সপ্তাহ আগে ওই অ্যাম্বুলেন্সের ব্যাটারিগুলো খুলে বিক্রি করে দেন ইউপি চেয়ারম্যান। সেইসাথে ইউপি চত্বরে থাকা সৌর বিদ্যুতের লাম্প পোস্টের তিনটি ব্যাটারিও খুলে নিয়ে বিক্রি করে দেন তিনি। এ বিষয়ে ইউপি সদস্যসহ কারো সাথে কোন প্রকার পরামর্শ করেননি ইউপি চেয়ারম্যান। করা হয়নি কোন রেজ্যুলেশন। এমন ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়া লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ইউএনওর কাছে।

এ বিষয়ে ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ শাফিউর রহমান জানান, সৌর প্যানেলযুক্ত ল্যাম্পপোস্টের তিনটি ব্যাটারি মেরামতের জন্য উপজেলা শহরে পাঠানো হয়েছে। আমরাই ল্যাম্পপোস্ট থেকে নামিয়ে অটোরিকশা করে শহরে পাঠিয়েছি। চেয়ারম্যান সাহেব ব্যাটারিগুলো রিসিভ করে মেরামত করতে দিয়েছেন। আর অ্যাম্বুলেন্সে দীর্ঘদিন ধরে কোন ব্যাটারি ছিল না।

ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের কাছাকাছি মনোহারি দোকানি রনি মিয়া বলেন, আমার সামনেই কয়েকদিন আগে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যাটারি ও ল্যাম্পপোস্টের ব্যটারি গ্রাম পুলিশসহ কয়েকজন খুলে নিয়ে গেছে। দোকান থেকে বসে আমি দেখেছি।

অভিযোগকারী ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়া বলেন, অ্যাম্বুলেন্স থেকে ৫টি ও ল্যাম্পপোস্টের তিনটিসহ মোট ৮টি ব্যাটারি চেয়ারম্যান তাঁর লোকজনকে দিয়ে খুলে নিয়েছে। আমার সামনেই ব্যাটারিগুলো খুলে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কারো সাথে কোন পরামর্শ কিছুই তিনি করেননি। এখন অভিযোগ করায় তিনি বলে বেড়াচ্ছেন-ল্যাম্পপোস্টের ব্যাটারিগুলো নাকি তিনি ঠিক করতে পাঠিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম চৌধুরী জহর বলেন, অভিযোগ সবটাই মিথ্যা। সাবেক চেয়ারম্যানের কাছে দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার সময় ওই অ্যাম্বুলেন্সে ব্যাটারি ছিল না। আর ল্যাম্পপোস্টের ব্যাটারিগুলো নষ্ট হয়ে গিয়েছিল তাই মেরামতের জন্য শহরে মেকানিকের কাছে পাঠানো হয়েছে

ইউএনও রেজওয়ানা কবির বলেন, ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।