ভালুকা প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার উথুরা রেঞ্জের আওতায় আঙ্গারগাড়া বিটের অধিনে চাঁনপুর মৌজার গারোবাজার এলাকায় ২২৩ নম্বর দাগে বিট কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে বনের জমিতে বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। ওই এলাকায় মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন বিশাল আকারের বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন। গত শনিবার (১৭ আগস্ট) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আগের দিন শুক্রবার একতলার ছাদের ঢালাইয়ের কাজ শেষ করেছেন।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানান,ওই দাগে মুক্তিযোদ্ধা মৃত আব্দুল গফুরের পরিবারের লোকজন বাড়ি নির্মাণ করতে দেয়নি বনবিভাগ। অথচ রহস্যজনক কারণে একই দাগের লাগোয়া বহুতল ভবণ নির্মাণ করছে বন বিভাগে ম্যানেজ করে।

মৃত মুক্তিযোদ্ধার ছেলে মোবারক হোসেন জানান, বনবিভাগের লোকদের ৩০ হাজার টাকা দিতে চাইলেও সেই টাকা নেয়নি। তাদের হয়তো আরো বড় অঙ্কের টাকার দাবি ছিলো। এমনকি তার নির্মাণ করা বেশ কয়েকটি পিলার ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়ে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি করা হয়েছে। আর একই দাগে অপর ব্যক্তির বহুতল ভবন করার বিষয়ে জানতে চাইলে বনের লোকজন ওদেরটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেন।

স্থানীয় লোকজন আরো জানান, বর্তমান বিট অফিসার এখানে যোগদানের পর আ’লীগের দাপট দেখিয়ে বহু বাড়ি ঘর নির্মাণের অনুমতি দিয়েছেন এবং প্রতি বাড়ি ঘর বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তাছাড়া নির্বিচারে গাছ কাটাসহ বিভিন্ন মৌজা থেকে উঁচু টিলা কেটে নিয়েছে মাটি ব্যবসায়ীরা। আর ওই বিট অফিসার মাসোহারা নিয়ে মাটি ব্যবসায়ীদের সুযোগ করে দিতেন। এতে মাটির শ্রেনী পরিবর্তনের হিড়িক পড়ে যায় এই বিটে। এলাকাবাসি ওই অসাধূ বিট কর্মকর্তাকে অন্যত্র বদলির জোর দাবি জানান। মৃত আব্দুস সামাদের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম জানান, বনের লোকদের সাথে কথা বলে এবং তাদের অনুমতি নিয়েই শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিল্ডিং এর ছাদের ঢালাইয়ের কাজ করেছেন।

আঙ্গারগাড়া বিট অফিসার মাজহারুল ইসলামের সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি বলেন, চাঁনপুর মৌজায় বহুতল ভবন নির্মানের বিষয়টি তার জানা নেই। অনৈতিক সুবিধার কথা অস্বীকার করেন।

উথুরা রেঞ্জ কর্মকর্তা রেদুয়ান আহমেদ জানান, ওই চাঁনপুরের বিষয়সহ আরো একটি বাড়ি নির্মাণের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আরো দুই মাস আগে বিট অফিসারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো, কিন্তু কিভাবে কাজ অব্যাহত আছে, তা তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান।

ময়মনসিংহ (দক্ষিণ) সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) সাদিকুল ইসলাম জানান, খোঁজ নিয়ে বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে জানান।

ময়মনসিংহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আ ন ম আব্দুল ওয়াদুদ জানান, বনভূমিতে অবৈধভাবে ভবন নির্মাণকারীর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।