গৌরীপুর প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সহনাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সালাউদ্দিন কাদের রুবেলের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক বরাবর বিভিন্ন অনিয়ম-দর্নীতির লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁর পরিষদের ১১ ইউপি সদস্য।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, ইউপি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ও বিভিন্ন সুবিধা ভোগীদের কাছ থেকে অর্থ উৎকোচ গ্রহণ, ভিজিডি চাল পরিমাপে কম দেওয়া, কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি প্রকল্পে স্বজনপ্রীতি, ভূয়া নাম ব্যবহার করে অর্থ হাতিয়ে নেয়াসহ অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচী (ইজিপিপি) কাজের বিনিময় খাদ্য (৪০ দিনের) কর্মসূচীতে গত ২ বছরে কোন নতুন কাজ,

রাস্তা সংস্কার বা নতুন রাস্তা তৈরী করা হয়নি। কর্মসূচীতে যাদের নাম রয়েছে তাদের অধিকাংশই চেয়ারম্যানের নিকটতম আত্মীয়-স্বজন। উপকার ভোগীদের মোবাইল একাউন্টের সিমগুলো চেয়ারম্যান নিজের কাছে রেখে তার মামাত ভাইয়ের নগদ এজেন্টের মাধ্যমে উত্তোলন করে থাকেন।

এছাড়া গ্রাম পুলিশ নিয়োগের নামে ধোপাজাঙ্গালিয়া গ্রামের খোকন মিয়ার কাছ থেকে নগদ ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা, পল্টিপাড়া গ্রামের সুমনের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা, পেচাঙ্গীয়া গ্রামের আল-আমিন ও কাজলের কাছ থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে ৭ লাখ টাকা এবং ভালুকাপুর ও মরিচপুর গ্রামে থেকে আরো বেশ কয়েক জন প্রার্থীর কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারনা করেছেন। তাদের প্রতিবাদের মুখে পরে অল্প কিছু টাকা ফেরত দিয়েছে বলে অভিযোগকারীরা জানান।

অপরদিকে, গত বছর ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্টের (ভিজিডি) দুই মাসের চাল কালো বাজারে বিক্রি করে দেন ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন রোবেল। বিষয়টি সুবিধাভোগীরা জানতে পেরে প্রশাসনকে অবহিত করলে চাপের মুখে ২ মাসের ৬০ কেজি চালের পরিবর্তে মাত্র এক হাজার দুইশত টাকা দেন চেয়ারম্যান, অথচ ৬০ কেজি চালের বাজার মূল্য প্রায় তিন হাজার টাকা।

এছাড়াও উল্লেখিত ইউনিয়নের পাছার বাজারে চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় উন্নয়ন সহায়তা খাতের সরকারি বরাদ্ধকৃত ৯ লাখ ৯৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। পরবর্তীতে তিনি মাত্র ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৬ টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে বাকি টাকা আত্মসাৎ করেন। তাছাড়া গ্রাম্য সালিশ ডেকে সাধারণ লোকজনকে হয়রানি ও নির্যাতন, কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্টপোশকতা, ডিজিটাল সেবায় অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

গ্রাম পুলিশ নিয়োগে নামে প্রতারনার শিকার খোকন চেয়ারম্যানকে ঘুষ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন কাদের রুবেলের ব্যাক্তিগত মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।