বারহাট্টা সংবাদদাতা : কয়েক বছর আগে আগুনে বসত ঘরটি পুড়ে গেছে, গ্রামবাসীর সহযোগিতায় গোয়াল ঘরটিকে মেরামত করে কোন রকম দিনপার করছে এক চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়া ফুল বানু। ৬ মেয়ে ও দুই ছেলের জননী ফুলবানু স্বামী ওয়ারেছ আলীকে নিয়ে বড় কষ্টে দিনাতিপাত করছে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলা শ্রীরামপুর গ্রামে। ফুলবানুর বাড়িটি একটি বিলের কাছে হওয়ায় প্রতিদিন অল্প অল্প মাছ ধরে বিক্রি করে অভাবের সংসার চালাচ্ছে।

এই অভাবের সংসারে মাঝেমধ্যে ৬ মেয়ে বেড়াতে এসে তাদেরকে বেকায়দায় ফেললেও ফুলবানু তাতে নারাজ না। দুই ছেলে বিয়ে করে ঢাকা চলে গেছে। তারা এখন নিজেদের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। বাবা মা আছে বলে তাদের মনেও হয় না। বাড়ির কোন খোঁজ-খবর ছেলেরা নেয় না।

ফুলবানু বলেন, কতদিন ধরে আমার চোখটা নিয়া দৌড়াদৌড়ি করতাছি কোন কাম ওয়না, মোহনগঞ্জ মমিসিং (ময়মনসিংহ) গেছি, ডাক্তার কয় ঢাহা যাওন লাগবো। একটা দুইডা জাল আছে এইডি নিয়া মাছ মাইরা কোন রহম চলি। এতো টেহা কয় পাইয়াম। ডাক্তার কইছে অবরশন (অপারেশন) করন লাগবো। দুই ছেলে বিয়ে করে ঢাহা গেছেগা। আমরার কোন খোজ-খবর নেয় না।

এভাবে নিজের ডান চোখে হাত দিয়ে ঘষতে ঘষতে রোদে দাড়িয়ে কোন এক আশায় ক্যামেরার সামনে দুঃখের গল্প শোনাচ্ছিল ৭০ বছর বয়সের ফুল বানু। নিজের গোয়াল ঘরটি এলাকাবাসী বাঁশ কাঠ দিয়ে মেরামত করে বসবাসের উপযোগী করে দিয়েছে। এখন এই ঘরেই বসবাস করছে।

ফুল বানু নিজের নষ্ট হয়ে যাওয়া চোখটিতে হাত রেখে কথা বলায় বুঝা গেছে চোখে সারাক্ষণ এক ধরনের যন্ত্রণা হয়। তার চোখের ভাষায় এটা বুঝাতে চেয়েছে, যদি সে তার চোখের একটু সুচিকিৎসা পেতো!