বাকৃবি সংবাদদাতা : বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) মালয়েশিয়ার এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি অভিযোগ পাওয়া গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হারুণ-অর-রশিদের বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বার মোড়ে দেশি ও বিদেশি প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে ওই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরেও আমাদের এই কাহিনীগুলো শুনতে হচ্ছে এবং এখনো পর্যন্ত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কোন যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল গঠিত হয়নি যা আমাদের ১১ দফার দাবির মধ্যে একটি ছিল। এর আগেও বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষার্থীদের উপর শিক্ষক দ্বারা যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটছে। অনেক শিক্ষার্থী ভয়ে মুখ খুলতে পারছে না। আমরা চাই এগুলোর একটি সুষ্ঠু বিচার হোক। এজন্যই আমরা এখানে আজ সমবেত হয়েছি।’’
বাকৃবিতে অধ্যয়নরত এক নেপালি শিক্ষার্থী বিক্রম ধোজু বলেন, আমাদের বিদেশি শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপকের খারাপ আচরণের খবর শুনে আমরা চুপ করে বসে থাকব না। ওই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। আমরা চাই আইনের মাধ্যমে সকল অপরাধীর শাস্তি হোক। শ্লীলতাহানিকারীকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে। এ ঘটনার যথাযথ তদন্ত হোক। এটি বর্তমানে কেবল বিদেশি শিক্ষার্থীদের ব্যাপার নয়, এটি এখন আমাদের সবার চিন্তার বিষয়।
এই ঘটনায় মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুব আলমকে আহ্বায়ক এবং বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শহিদুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এদিকে এই সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিবেন বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মাহবুব আলম।
ঘটনার প্রেক্ষিতে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূইঁয়া জানান, এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখন তদন্ত কমিটির রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি। এখানে অপরাধী কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই ন্যায় বিচার করবো।’
এদিকে মুঠোফোনে একাধিকবার অধ্যাপক ড. মো. হারুন অর রশিদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি অধ্যাপক ড. মো হারুন-অর-রশিদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও লাঞ্ছনার অভিযোগ করেছে মালয়েশিয়ার নারী শিক্ষার্থী। ঘটনাটি জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।