ভালুকা প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার মাস্টারবাড়ি এলাকায় অবস্থিত ক্রাউন ওয়ারস প্রাইভেট লিমিটেডের নির্মাণাধিন ভবনের লিফটের গর্তে পড়ে সাজ্জাদ হোসেন (২০) নামে এক শ্রমিক নিহতের ঘটনায় দুইদফা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে কারখানার শ্রমিকরা। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার পর ঘটনা জানাজানি হলে শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করেন।

সোমবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগদান না করে প্রথমে কারখানার মূলফটকে এবং পরে তারা মহাসড়কে নেমে আসে প্রায় এক ঘন্টা অবরোধ করে রাখে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্য, থানা ও শিল্পপুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়ে ভ্যাপসা গরমে চরম দূর্ভোগের শিকার হন দূরপাল্লার যাত্রীরা শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে তাদের ভাই মারা গেছেন। নির্মাণাধিন ভবনের লিফটের চারপাশে বেড়া থাকলে হয়তোবা এই নির্মম মৃত্যুর ঘটনা ঘটতো না। এমনকি সাজ্জাদ হোসেন লিফটের গর্তে ৪০ ফুট নিচে পড়ে থাকার বিষয়টি কর্তৃপক্ষ হয়তো আগেই টের পেয়েছেন। কিন্তু নিজেদের দায় এড়ানোর জন্য পুলিশকে ঘটনাটি না জানিয়ে লিফটের গর্তের চারপাশে রাতারাতি বেড়া নির্মাণ করে ফেলেন। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হলে হয়তো সাজ্জাদ হোসেনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হতো।

জানাযায়, পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার বোতলডাঙ্গা কাজীপাড়া গ্রামের আজাদ হোসেনের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন ও তার বড় ভাই সেলিম হোসেন ওই কারখানায় দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করে আসছিলেন। সাজ্জাদ হোসেন ক্রাউন ওয়ারস প্রাইভেট লিমিটেড নামক কারখানার গার্মেন্ট সেকশনে কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর হিসেবে চাকরি করতেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি ডিউটিতে যোগদানের পর নিখোঁজ হন। শনিবার তার বড় ভাই কোম্পানির কর্তৃপক্ষের তার ভাই নিখোঁজ হওয়ার জানালে তারা তেমন গুরুত্ব দেন নি। রোববার সন্ধ্যা থেকে দূর্গন্ধ শুরু হলে নির্মাণাধিন পাঁচতলা ভবনের লিফটের ৪০ ফুট নিচে লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পরে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ নিহতের লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।

নিহতের বড় ভাই সেলিম হোসেন জানান, তার ভাই সাজ্জাদ হোসেন নিখোঁজ হওয়ার পর গত শনিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন।

ভালুকা মডেল থানার নাবগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শামছুল হুদা খান জানান, শ্রমিক নিহতের ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। মহাসড়ক অবরোধের বিষয়ে তিনি জানান, শ্রমিক নিহতের ঘটনায় তার সহকর্মীরা মহাসড়ক অবরোধ করলে তাদেরকে বুঝিয়ে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।