আফজাল হোসেন, বারহাট্টা সংবাদদাতা : প্রয়োজনের পর কেউ কাউকে মনে রাখে না। আজব এই দুনিয়ায় এমন ঘটনা অহরহ হলেও কিছু ঘটনা একটু ব্যতিক্রম। এক সময় নিজের জায়গা পাহারার কাজে যাদেরকে ব্যবহার করেছিলো এখন তারা জঞ্জালে পরিনত হয়েছে। এই যেনো গলায় কাঁটা বিধার মতো। এই কাঁটার নাম রেনু বালা সুন্দরী, সে মৃত উমেদ চন্দ্র কর্মকারের স্ত্রী।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধায় নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় সে কে পি পাইলট উচ্চ বিদ্যালের মাঠে এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা দেখা যায়। ৯০ বছরের রেনু বালা সুন্দরী ও তার মেয়েকে ঘর থেকে মালামাল সহ বের করে দিয়েছে। তারা এখন খোলা আকাশের নিচে বসে এই শীতের রাতে কাঁপছে আর কাঁদছে। বৃদ্ধা মহিলার স্বামী ৫০ বছর আগে মোহনগঞ্জ থেকে বারহাট্টায় এসে একটি আশ্রমে বসবাস করতো। পরবর্তীতে ডাঃ মানিক পন্ডিত নামে এক ভদ্রলোক তাদেরকে তার একটি জরাজীর্ণ বাসায় আশ্রয় দেয়। সেই থেকে এই দম্পতি এই বাড়িতে বসবাস করতে থাকে।
পরবর্তীতে এই বৃদ্ধার স্বামী দুই মেয়ে এক ছেলে রেখে মারা যায়। এরপর নিজের একমাত্র ছেলে ও এক মেয়ের জামাই মারা যায়। এই বিধবা মেয়েকে নিয়ে জীবনে শেষ দিনগুলো কাটছিলো রেনু বালা সুন্দরীর। কিন্তু আজ তাদেরকে ঘরের আসবাবপত্র সহ ঘর থেকে বের করে দিয়ে গেইটে তালা লাগিয়ে দিয়েছে ডাঃ মানিক পন্ডিত।
বারহাট্টা উপজেলার ছাত্র সমন্বয়ক সায়মুন আরেফিন অঙ্গন বলেন, এই শীতের দিনে বৃদ্ধ মহিলা ও তার মেয়েকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। এই কাজটি মোটেও ঠিক হয় নি। এই মহিলাকে আমি ছোট বেলা থেকেই এই বাসায় বসবাস করতে দেখছি। যখন আমরা মাঠে খেলতাম তখন বল গিয়ে টিনের বেড়ায় আঘাত লাগলে এই বৃদ্ধ মহিলা ঘর থেকে বেড়িয়ে এসে আমাদের শাসন করতো।
ডাঃ মানিক পন্ডিতের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি এই মহিলাকে বহুদিন ধরে আমার ঘরটি ছেড়ে দিতে বলতেছি। কিন্তু সে কিছুতেই আমার কথা শুনেনি। তার একটা নাতি মোহনগঞ্জে কর্মকারের কাজ করে ইচ্ছে করলে সে সেখানে যেতে পারে কিন্তু যায় না।