আফজাল হোসেন : ডাবের পানি স্বাস্থ্যকর পানীয়গুলোর মধ্যে একটি। ডাবের পানি পান করার অনেকগুলো উপকারিতা রয়েছে। এটি সব বয়সীদের জন্যই বিশেষভাবে উপকারী।

কিন্তু এই ডাব গাছ থেকে সংগ্রহ করা মোটেই সহজ নয়। জীবনের ঝুঁিক নিয়ে সুউচ্চ গাছ থেকে ডাব সংগ্রহ করে প্রতিদিন হাজার হাজার ডাবের চাহিদা পূরণ করছে একদল খেটে-খাওয়া মানুষ।

তেমনি নেত্রকোনার বারহাট্টার স্বল্প দশাল গ্রামের একদল মানুষ দীর্ঘদিন যাবত গাছ থেকে ডাব সংগ্রহ করে ও বিক্রি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে।

এই গ্রামের দুখু মিয়ার ছেলে মাবুদ মিয়া (৬০) প্রায় ২০ বছর আগে এই ডাবের ব্যবসা শুরু করে। এখন এই গ্রামের আরও ৮-১০ জন লোক এই ডাবের ব্যবসার সাথে জড়িত হয়েছে। স্বল্প দশাল গ্রামের রিপন মিয়া,সাজল মিয়া,স্বাধীন মিয়া, খোকন মিয়া,সুমন মিয়া,সুলতান মিয়া,নবী হোসেন, নাইম মিয়া ও উপজেলা মোহনপুর গ্রামের আমছর আলী এই ব্যবসা করে তাদের সংসার চালাচ্ছে।

স্থানীয়রা জানায়, বিগত সময় গাছে উঠে ডাব পাড়ার সময় দু'জনের মৃত্যু হয়েছে। এরপরও দীর্ঘ দিন ধরে একেই কাজ করতে করতে এখন আর অন্য কাজ করতে পারে না বলে এই ঝুকিপূর্ণ কাজেই করছে স্বল্প দশাল গ্রামের বেশ কয়েকটি পরিবার। দেখতে সহজ মনে হলেও কাজটি বেশ কঠিন। পেটের তাগিদে জীবনের মায়া ত্যাগ করেই এই ব্যবসা করে যাচ্ছে বারহাট্টার ডাব ব্যবসায়ীরা।

প্রতিদিন সকালে তারা ব্যাটারী চালিত ভ্যান নিয়ে নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার দুর্গম গ্রামগুলোতে যায় ডাবের সন্ধানে। ডাব গাছে রেখে দাম-দর ঠিক করে নিজেরাই গাছে ওঠে ডাব সংগ্রহ করে ভ্যান বোঝায় করে সন্ধ্যায় নিয়ে আসে। পরে পিক-আপ গাড়িতে ডাবগুলো লোড করে দেয়। এভাবে প্রতিদিন ১৩ থেকে ১৪ শত ডাব ঢাকায় পাঠিনোর পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে ডাবের চাহিদা পূরণ করছে।

বারহাট্টার প্রথম ডাব ব্যবসায়ী মাবুদ মিয়া বলেন, প্রতিদিন বারহাট্টা থেকে ঢাকা ঢাকায় এক গাড়ি ডাব পাঠায়। বাজারের অবস্থা ভাল থাকলে প্রতি পিছ ডাব ৮০ টাকায় বিক্রি করা যায়। শীত, গরম সব সময় ডাবের চাহিদা থাকে বলে জানায় এই ব্যবসায়ী।

তিনি আরো বলেন, এটি অনেক কষ্টের কাজ। আগে একটি ডাব ৫/৭ টাকায় পাওয়া যেতো এখন একটি ডাব ৫০-৬০ টাকায় কিনতে হয়। এরপর ডাব পাড়তে গিয়েও অনেক ঝুঁকি।

অন্যান্য ব্যবসায়ীরা বলেন, আগে ১০ টাকা হলেই একটি ডাব কেনা যেতো এখন একটি ডাব ৬০ টাকায় কিনতে হয়। গাছ থেকে ডাব পারতে অনেক ঝুঁিক রয়েছে। এরপরও অন্য ব্যবসা যেহেতু জানি না তাই এটাতেই পড়ে আছি।