হালুয়াঘাট প্রতিনিধি : একটি বাঁশের সাঁকো। তার উপর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অটো, রিক্সা, সিএনজি ও মোটরসাইকেলসহ সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের চলাচল। ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার ঘোষগাঁও ইউনিয়নে ভূইয়াপাড়া গ্রামের নেতাই নদী এলাকার চিত্র ঠিক এমনই।

বর্ডার রোড নামের সীমান্ত সড়কটি পশ্চাৎপদ হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া উপজেলার সীমান্ত অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা বদলে দিলেও নেতাই নদীর উপর একটি সেতুর জন্য সীমান্ত সড়কের পথচলা যেন থমকে গেছে। সীমান্ত সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ ও যানবাহনের চলাচল। ভূইয়াপাড়া এলাকায় এসেই গতিপথ পাল্টাতে হয়। সেতুর অভাবে ঘোষগাঁও বাজার হয়ে ধোবাউড়া সদরের মধ্যদিয়ে

২০কিলোমিটার ঘুরে চারুয়াপাড়া এলাকার সীমান্ত সড়কে উঠতে হয়। একইভাবে ঐ এলাকার মানুষের এ পাড়ে আসতে হয়। ফলে সময় লাগে ২ ঘন্টারও বেশী। নদীটির দু’পাশে দূর্গাপুর উপজেলার বিজয়পুর ও হালুয়াঘাট উপজেলা গাবরাখালী গারোপাহাড় পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। ফলে দেশের বিভিন্নপ্রান্ত থেকেই প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক পর্যটক এসব এলাকায় যাতায়াত করেন।

ভূইয়াপাড়া নেতাই নদীর উপর ২০০ মিটার দৈর্ঘ্য বাঁশের সাঁকো দিলেও তা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন নদী পারাপার হচ্ছেন হাজারো মানুষ ও ছোট ছোট যানবাহন। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচলের সময় মাঝেমধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। সাঁকোটি সারা বছরের জন্য স্থায়ী নয়। নভেম্বর থেকে এপ্রিলের শেষভাগ পর্যন্ত একাধিকবার সংস্কার করার পর বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে সাকোঁটি নদীর পানিতে ভেসে যায়। এরপর শুরু হয় আরেক সংগ্রাম। যাতায়াতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় রোগী, শিক্ষার্থী, কৃষক, পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের এ সড়কটির ৪২ কিলোমিটার পড়েছে ময়মনসিংহ অংশে। ২০২৩ সালে এ অংশের রোডের নির্মাণকাজ শেষ হয়। কাজটি শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে। সেই সময় এখানে সেতু নির্মাণের কথা থাকলেও সেটি আর করা হয়নি। ফলে সড়কের উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এই এলাকার লাখো মানুষ।

স্থানীয় কুদ্দুস আলী ফকির বলেন, সীমান্তসড়কটি এলাকার মানুষের কাছে আর্শিবাদ হয়ে এসেছিলো। শুধু মাত্র সেতুর অভাবে ভাগ হয়ে গেছে নদীর দু’পাড়ের জীবনযাপন। স্থানীয়ভাবে কষ্ট করে বাশেঁর সাঁকো দিয়ে নদী পাড় হলেও বিপদে পড়তে হয় বর্ষায়। সে সময় কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসা করতে নিতে নিতেই অনেক সময় রোগী মারা যায়। সেতুর জন্য আশে পাশের জমির দাম খুবই কম।

মোটরসাইকেল চালক হেলিম মোল্লা বলেন, আমি সবসময় এই সড়ক দিয়ে চলাচল করি। এখন বাঁশের সাকোঁ থাকলেও বর্ষাকালে নদী পাড়ে এসে ২০ কিলোমিটার ঘুরে ওপারে যেতে হয়। সীমান্ত সড়কের সকল উন্নয়ন এই নদীর উপর সেতু না থাকার কারণে শেষ হয়ে গেছে। আমাদের দাবি থাকবে দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন এখানে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খায়রুল বাশার মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন বলেন, সীমান্ত সড়কটি নির্মাণের সময় সেতুর বিষয়টি প্রস্তবনায় ছিল না। আমরা ইতিমধ্যেই মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। সেতুটি যেহেতু ৩০০ মিটার বা ১ হাজার ফুট দীর্ঘ তাই এটি পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। সেটি শেষ হলেই আশাকরি এখানে একটি সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হবে।