মো.আনোয়ারুল ইসলাম ভূঞা : কিশোরগঞ্জে পেশাজীবী সংগঠনের ভবন নির্মানের অন্তরালে প্রায় ৬ কোটি টাকা মূল্যের সরকারি জায়গা দখল করা হয়েছে। আনুষ্টানিক ভাবে দখলকৃত জায়গায় একটি ফলকও প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বি এম এ) কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার নিজস্ব ভবন নির্মানের জন্যে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের সরকারী জায়গা দখল করে ফলক উন্মচনের মাধ্যমে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। জায়গাটির অবস্থান জেলা জজকোর্ট ভবনের দক্ষিনে, সরকারী টিবি হাসপাতাল লাগোয়া উত্তরের অংশে ও স্বাস্থ্য প্রকৌশলী কার্যালয়ে প্রবেশ পথের বাম পার্শ্বে। গত ১৭ মার্চ দখলকৃত জায়গায় ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে একটি ফলক প্রতিস্থাপন করা রয়েছে। ফলকে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কারী হিসেবে কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. জিল্লুর রহমানের নাম লিখা রয়েছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ফলকটির উপরে একটি ব্যনারও ঝুলছে। ব্যনারটিই জানান দিচ্ছে আনুষ্টানিক ভাবেই বি,এম,এ, ভবন কিশোরগঞ্জ নামীয় ফলকটি সেখানে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। ঝুলতে থাকা ব্যানারটিতে সংগঠনের সভাপতি হিসেবে ডাঃ মাহবুব ইকবালের নাম লিখা রয়েছে।

অভিযোগ ঊঠেছে জনগণের কষ্টার্জিত অর্থে শিক্ষিত হয়ে চিকিৎসকরা সমাজে নিজেদেরকে দেশপ্রেমিক হিসেবে পরিচয় না দিয়ে দেশের জনগনের সম্পদ জবরদখল করছে।

media image
ছবি

এ ব্যাপারে শহরে বসবাসকারী দেশ প্রেমিক প্রবীন নাগরিকরা বলেন দেশের উন্নয়ন ও সেবামূলক কাজে পেশাজীবীদের অবদান অনস্বীকার্য। পেশাজীবীরা তাঁদের পেশার স্বার্থে এবং নিজেদের কল্যাণে সংগঠন করবেন,যা তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার। এ ধরনের সংগঠনগুলো সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক। পেশার কল্যাণে তারা কাজ করবেন, এটাই স্বাভাবিক। সংগঠনের আড়ালে রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে সরকারী জায়গা দখল করা পেশার স্বকীয় ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন করা হয়েছে। এতে করে তারা আর নিজেদের পেশার প্রতি বিশ্বস্থতা ও নিষ্ঠাবান থাকছেন না। পেশাজীবীরা দলীয় আনুগত্যের চেয়ে পেশার প্রতি বিশ্বস্থ থাকবেন,কর্মনিষ্ঠ হবেন সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ও নির্দলীয় সংগঠন হিসেবে কর্মকান্ড চালিয়ে যাবেন, সেটাই দেশবাসীর কাম্য। পেশাজীবী সংগঠনের রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করাও সমাজে বেমানান।

এ ব্যাপারে বি এম এ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক ডাঃ আব্দুল ওয়াহাব বাদলের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, তারা সংগঠনের অনুকুলে সরকারী ভাবে উক্ত স্থানে ১২ শতাংশ জায়গা বরাদ্ধ পেয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে জায়গাটির প্রকৃত মালিকানা জেলা পাট গবেষনা কেন্দ্রের। জেলা পাট গবেষনা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আশরাফুল আলমের কাছে এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার তার মোবাইলে (০১৭১৮৫২৯৬৮২ ) কল দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আব্দল্লাহ আল মাসঊদের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান জায়গাটি বি এম এ সংগঠনকে বরাদ্ধ প্রদানের বিষয়ে জেলা প্রশাসন কিছুই জানেনা। এদিকে সচেতন জেলাবাসীর পক্ষে জবরদখল হওয়া সরকারী এ জায়গাটি উদ্ধারে জরুরী প্রশাসনিক হস্থক্ষেপের দাবি উঠেছে।