আফজাল শরীফ : জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার গারো পাহাড়ে বসবাসরত উপজাতির প্রায় ৩শত পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহার সামগ্রী ও নগদ আর্থিক সাহায্য থেকে বঞ্চিত ।

উপজেলার গারো পাহাড়ে কুচ, হাজং ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার লোক বসবাস করে। এদের কেউ সরকারি কোন উপহার সামগ্রী ও নগদ আর্থিক সাহায্য পাননি বলে তাদের অভিযোগ। করোনা মহামারির কারণে তাদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম আর্থিক সংকট, বর্তমানে তাদের এখন অর্থ-অনাহারে দিন কাটছে।

এসব উপজাতির অনেকেই অভিযোগ করেন, স্থানীয় ইউপি সদস্যরা তাদের কাছ থেকে উপহার সামগ্রী ও নগদ আর্থিক সাহায্যের জন্য জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি নিয়ে গেছেন তবে আজও কোন সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা পাননি।

তারা বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও এনজিও এর কাছে থেকে কিছু আর্থিক সাহায্য পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। গত ২৪শে মে রবিবার সারাদিন গারো পাহাড়ের উপজাতিদের দিগলাকোনা, সোন্নাতপাড়া, বালিঝুড়ি, টিলাপাড়া, গারোমারা ও হাতিবেড়কোণা গ্রামগুলো সরেজমিনে ঘুরে এসব অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আমরা কথা বলেছিলাম দিগলাকোণার পিটিশন মারমা, ছনিলা মারাক, অঞ্জলি মারাক, বাচিনা আরেং, বিতন মান্ডা, গারোমারার রিতু মারাক, প্রকাশ সাংমা, আনিকা মারাক, লিপা সাংমা, পরিশন মারাক, বালিঝুড়ির শাহরুক মারাক, রিতা সাংমা, মিতালী সাংমা, উদয় সাংমা, সুন্নাতপাড়ার বালিনা মারমা ও তাপস সাংমার সাথে তাদের সকলেরই অভিযোগ ছিলো একই।

এ বিষয়ে ধানুয়া-কামালপুরের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নূর জাহান বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি মাত্র ১০ টি প্যাকেট উপহার সামগ্রী পেয়েছিলাম। আমার তিনটি ওয়ার্ডে ১৯টি গ্রাম আছে। এখন বলেন কাকে ছেড়ে কাকে দিব। আমরা যা পেয়েছি তা চালিদার তুলনায় অনেক কম। সরকারি উপহার সামগ্রী ছাড়াও আমি ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই সাহায্য সহযোগিতা করেছি তারপরেও যদি তারা না করে তবে আমার কিছু করার নেই।

বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য ধানুয়া-কামালপুরের ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালের ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্ঠা করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ.স.ম জামশেদ খোন্দকার জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আমাদের যে তালিকা দিয়েছে সেটার উপর ভিত্তি করেই আমরা তাদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার সামগ্রী পাঠিয়েছি, যদি তালিকার কেউ উপহার সামগ্রী না পেয়ে থাকে তবে সেটা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকেই জবাবদিহি করতে হবে।

তিনি আরও জানান, নগদ আর্থিক সহযোগিতার জন্য আমরা একটি তালিকা করে পাঠিয়েছি, সেটি প্রক্রিয়াধীন আছে, তালিকায় তাদের নাম থাকলে অবশ্যই পাবে। যদি উপহার সামগ্রী বিতরণে অনিয়ম হয়েই থাকে তাহলে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব বলে জানান তিনি।