১৯৯০ সাল।

ছেলে বিয়েতে যৌতুক হিসেবে সাইকেল চাইত।

২০০০ সাল।

ছেলে বিয়েতে যৌতুক হিসেবে মোটরসাইকেল চাইত।

.

.

.

২০৩০ সাল।

ঘটক আর মেয়ের বাবার মধ্যে কথাবার্তা হচ্ছে।

‘ছেলেপক্ষের একটা আবদার আছে…’

মেয়ের বাবা জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালেন।

‘ছেলেকে ১০ কেজি পেঁয়াজ দিতে হবে। ছেলের অনেকদিনের শখ।’

‘১০ কেজি?’ মেয়ের বাবা আকাশ থেকে পড়লেন।

‘একটু কমানো যায় না? দরকার হলে আমাদের একটা টয়োটা করলা দিয়ে দিলাম।’ মেয়ের বাবা মিন মিন করে বলল।

‘নাহ ভাই। বললাম না ছেলের অনেক দিনের শখ।’

মেয়ের বাবা নিমরাজী হলেন। কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।

বিয়ের দিন।

কাজী বিয়ে পড়াতে শুরু করতেই ছেলের বাবা উঠে দাঁড়ালেন।

‘দাঁড়ান কাজী সাহেব। আগে পেঁয়াজ বুঝে নিই। পরে বিয়ে।’

সবাই থমকে গেল। একে অপরের দিকে তাকাচ্ছে সবাই।

মেয়ের বাবা ঘর হতে একটা বাজারের ব্যাগ নিয়ে আসলেন।

‘ভাইসাহেব, এইখানে ৮ কেজি পেঁয়াজ আছে। বাকীটা আগামী সপ্তাহেই দিয়ে আসব।’

ছেলের বাবা রাগী ভঙ্গিতে তাকালেন। [ব্যাকগ্রাউন্ডে তখন ঝড়ের মিউজিক]

‘নাহ। এই বিয়ে হবে না। আরো দুই কেজি পেঁয়াজ ছাড়া এই বিয়ে সম্ভব না।’ বলেই ছেলের বাবা মেয়েদের সাততলা বাড়ি থেকে নেমে যেতে উদ্যত হলেন। ‘চলে আয় কুদ্দুস। এই বিয়ে হবে না।’

অন্দরমহলে কান্নার আওয়াজ।

মেয়ে এসে দাঁড়াল ঘরে। চোখে জল।

‘চৌধুরী সাহেব, পেঁয়াজের লোভে মানুষকে আর মানুষ মনে হয় না? মনে রাখবেন পেঁয়াজ থাকলেই বড়লোক হওয়া যায় না। বড়লোক হতে হলে দরকার সুন্দর একটা ফেইসবুক একাউন্ট। যা আপনাদের নেই। চলে যান। আমি এখুনি স্ট্যাটাস দিচ্ছি।’

কুদ্দুস উঠে দাঁড়াল। তার চোখ খুলে গেছে। এই মেয়ে আবার তার ফেসবুক ফ্রেন্ড। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে। ‘না বাবা। এই বিয়ে হবেই। পেঁয়াজ তোমাকে অন্ধ করে দিয়েছে বাবা।’

অবশেষে বিয়ের সানাই। আকাশে তারাবাত্তি।