স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহ নগরীর সি,কে,ঘোষ রোডস্থ হারুন টাওয়ারের মালিক ব্যবসায়ী গোলাম আম্বিয়া হারুনের বাসা থেকে বৃহস্পতিবার ককটেল তৈরির সরঞ্জামসহ ৩৪ জনকে আটক করেছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ব্যবসায়ী হারুনের অত্যাচার ও হয়রানির প্রতিবাদে সকালে হারুন মোবাইল মার্কেট বন্ধ রেখে মার্কেটের সামনে মানববন্ধনসহ সমাবেশ করে দোকানীরা।

এসময় মানববন্ধনের ওপর কককেটল হামলা হলে হারুনের ভাড়া করা সন্ত্রাসীদের সাথে দোকানীদের ধাওয়া পাল্টা ও সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে কয়েক রাউন্ড ফাকা গুলি বর্ষন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ সময় এলোপাথারি দৌড়ঝাপ শুরু হলে বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে ৩/৪টি বিস্ফোরিত ককটেলের সরঞ্জাম উদ্ধার করে পুলিশ।

পরে দুপুরের দিকে পুলিশ গোলাম আম্বিয়া হারুনের কমপ্লেক্সের একটি কক্ষ থেকে ককটেল ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধারসহ ৩৪ জনকে আটক করে।

তবে ঘটনার মূলহোতা হারুন টাওয়ারের মালিক গোলাম আম্বিয়া হারুনকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ তালুকাদার জানান, আটক ৩৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই ঘটনায় বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলা হবে।

ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানা গেছে, হারুন টাওয়ারের মালিক দীর্ঘদিন ধরে ঐ ভবনে ব্যবসা করে ব্যবাসয়ীদের উপর নানাভাবে নির্যাতন, বেআইনী উচ্ছেদ, হামলা ও মামলা মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী ও নির্যাতন করে আসছে। এক পর্যায়ের এ সব ঘটনায় হারুন টাওয়ারের ব্যবসায়ীরা ফুসে উঠে।

বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর মোবাইল মার্কেট হারুন টাওয়ারের মালিক গোলাম আম্বিয়া হারুনের নির্যাতনের প্রতিবাদে ঐ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রেখে মানববন্ধন করে।

এ সময় গোলাম আম্বিয়া হারুনের নেতৃত্বে তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা ব্যবসায়ীদের ছত্রভঙ্গ করতে তাদের উপর হামলা ও ককটেল চার্জ করে। মুহুর্তে দিকবেদিক হারিয়ে ফেলে বেশ কয়েকজন আহত হন বলে একাধিক ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা জানান।

এক পর্যায়ে সকল ব্যবসায়ী রাস্তায় নেমে আসে। খবর পেয়ে কোতোয়ালী পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করে। এছাড়া পুলিশ সিকে ঘোষ রোড গোলাম আম্বিয়া হারুনের বাসা তল্লাশি করে ৩৪ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, ফাহিম শাহরিয়ার অনন্ত, ইফতেখার মাহমুদ, মোঃ রাফি, ইশরাক আহম্মেদ, আমিরুল ইসলাম সেজান, মোঃ সাকিব, অংকন দাস, শ্রাবণ দাস, জয় দাস, তোফায়েল হোসেন আকাশ,বায়জিদ আহমেদ জিহাদ, জাকির হোসেন, ওয়াকিল ইয়ার চৌধুরী, ইমামূল ফেরদৌস সন্ধি, পারবন চৌধুরী, শান্ত, বিজয় বর্মন, আবু রায়হান, দিদার ইসলাম ফয়সাল, মাশরাফি মামুন, মোঃ সাকিব, ফাপরহান শিহাব, আমিনুল ইসলাম, জয়েল সাগর,দীন ইসলাম, মোঃ সাকিব, রুবাইয়াত ই রেজা, আরমান হিমেল, পারভেজ মোশাররফ, মেহেদি হাসান ও নাহিয়ানি খান।

হারুন টাওয়ারের ব্যবসায়ী দুর্জয় টেলিকমের মালিক বিপুল সাহা জানান, ৭ সাত লক্ষ টাকা জামানত দিয়ে তিন বছরের জন্য দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করে আসছি। ভাড়ার মেয়াদ শেষ হতে না হতেই আমাকে দোকান ছেড়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। জামানতের টাকা ফেরত চাইলে গত ২৬/০৮/২০২০ইং তারিখ মালিক গোলাম আম্বিয়া হারুন তার ছেলে রোহান সহ অজ্ঞাত ৭/৮ জন আমাকে দোকান ছেড়ে দেওয়ার জন্য হুমকি দেয়। আবারো আমার জামানতের টাকা ফেরত চাইলে সন্ত্রাসী কায়দায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার উপর হামলা চালায়।

হারুন টাওয়ারের ব্যবসায়ীরা জানান, মার্কেটের মালিক ব্যবসায়ীদের নির্যাতন, গালিগালাজ, অনবরত দোকান থেকে ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদের হুমকি দিয়ে থাকে। এর প্রতিবাদে আমরা শান্তিপূর্ন মানববন্ধন করতে গেলে তার লালিত সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ককটেল চার্জসহ আমাদের উপর হামলা চালায়।

এদিকে ব্যবসায়দের উপর হামলা এবং হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধনে ককটেল চার্জ করায় ব্যবসায়দের শীর্ষ সংগঠন ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং হারুন টাওয়ারের ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আমিনুল হক শামীম, সহ-সভাপতি শংকর সাহা, মটর মালিক সমিতির সম্পাদক সুমনাথ সাহা, কোতোয়ালী থানার ওসি ফিরোজ তালুকদারসহ অন্যান্যরা।