তপু সরকার হারুন : শেরপুরের বারোমারী সাধু লিও’র খিস্ট্র ধর্মপল্লীতে রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের ফাতেমা রাণীর বার্ষিক তীর্থ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রতি বছর দু’দিনব্যাপী বেশ জাকজমকভাবে ওই তীর্থ উৎসব অনুষ্ঠিত হলেও এবার করোনা মহামারীর কারণে অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করে মাত্র ৬ ঘন্টায় শেষ করা হয়।শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ৯ টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৩ টার মধ্যে তীর্থের সকল কার্যাদি শেষ করা হয়। এবারের তীর্থের মূল সুর ছিল ‘দীক্ষিত ও প্রেরিত; মঙ্গলবাণী সাক্ষ্যদানে ফাতেমা রানী মা মারিয়া’।

জানা যায়, প্রতি বছর অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দু’দিনব্যাপী পালিত হওয়া ওই তীর্থ উৎসবে প্রায় ৫০ হাজার খ্রিস্ট ভক্তের আগমন ঘটলেও এবার করোনা পরিস্থিতিতে মাত্র ৫শ মানুষের সমাগম ঘটানোর প্রস্তুতি নেয়া হলেও , ভক্তের সংখ্যা হাজারে ছাড়িয়ে যায়।

এবার সকাল সাড়ে ৯টায় আলোক শোভাযাত্রা, সাড়ে ১১টায় খ্রিস্টযাগ, বেলা ২টায় ব্যক্তিগত প্রার্থনা ও বেলা ৩টায় শেষ আর্শীবাদ অনুষ্ঠিত হয়। তীর্থ উৎসবে অংশগ্রহণকারী সকল তীর্থ যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং মাস্ক পরিধান করা বাধ্যতামূলক করা হয়। তীর্থে আগত খ্রিস্ট ভক্তরা জানান, মা মারিয়ার কাছে তাদের নানা মান্নত পূরণ করতে সীমিত আকারে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই এখানে এসেছেন।

এদিকে তীর্থযাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে উৎসবস্থলে মোতায়েন করা হয় জেলার কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা সহ ২৫০ জনের মত আইন শৃংখলা বাহেনী পুলিশ নিরাপওার দায়িত্বরত ছিলেন । ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য জুয়েল আরেং প্রতি বছরের মতোই এ তীর্থ উৎসবে অংশ নেন।

তীর্থ উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব কার্ডিরোজ চিরান জানান, করোনা মহামারীর কারণে অনুষ্ঠানসূচি সংক্ষিপ্ত করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠান পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তীর্থ উদযাপন কমিটির কো-অর্ডিনেটর রেভারেন্ট ফাদার মনিন্দ্র মাইকেল চিরান জানান, পৃথিবী যেন করোনা ভাইরাস থেকে দ্রুত মুক্তি লাভ করে সে প্রার্থনাই এবারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

উল্লেখ্য, ১৯৪২ সালে প্রায় ৪২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় বারোমারী সাধু লিওর ধর্মপল্লী। ময়মনসিংহ ধর্ম প্রদেশের প্রয়াত বিশপ ফ্রান্সিস এ গমেজ ১৯৯৮ সালে এ ধর্মপল্লীকে ফাতেমা রাণীর তীর্থস্থান হিসেবে ঘোষণা করেন।

এখানে পর্তুগালের ফাতেমা নগরীর আদলে ও অনুকরণে পাহাড় ঘেরা মনোরম পরিবেশে গড়ে তোলা হয় ‘ফাতেমা রানীর তীর্থস্থান’। সেই থেকে খ্রিস্টমন্ডলীর সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিবছর ভিন্ন ভিন্ন মূলসুরের উপর ভিত্তি করে এখানে অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতি ও শুক্রবার দু’দিনব্যাপী বার্ষিক তীর্থ উৎসব পালিত হয়ে আসছে।