শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুরের সদর উপজেলার ধলা ইউনিয়নের বউলি বিলে মৎস্য সম্পদ রক্ষা, প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ এবং বিলের বাস্তুতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে এক মোবাইল কোর্টের অভিযানে ৭০টি অবৈধ মাছ ধরার জাল জব্দ করে তা আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক মজনুন ইশতি এর নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। প্রায় চার ঘণ্টাব্যাপী চলা অভিযানে বউলি বিলের বিভিন্ন পয়েন্টে তল্লাশি চালিয়ে ৬০টি চায়না দুয়ারি জাল এবং ১০টি কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। পরে সেগুলো প্রকাশ্যে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।

এই অভিযানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মমতাজুন্নেছা, শেরপুর সদর থানা পুলিশের সদস্য, স্থানীয় প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা।

মৎস্য কর্মকর্তারা জানান, চায়না দুয়ারি এবং কারেন্ট জাল অত্যন্ত ক্ষতিকর। এসব জালের ফাঁদে শুধু বড় মাছ নয়, পোনা ও জলজ জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়। এর ফলে বিল ও নদী-নালার স্বাভাবিক পরিবেশ ও প্রজনন চক্র ব্যাহত হয়। তাই এসব অবৈধ জাল ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইশতিয়াক মজনুন ইশতি বলেন, মৎস্য আইন লঙ্ঘন করে যারা পরিবেশ ও জলজ সম্পদ ধ্বংসে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। বিলের জীববৈচিত্র্য ও স্থানীয়দের জীবিকা রক্ষায় আমরা আরও কঠোর ব্যবস্থা নেব।

স্থানীয় সচেতন নাগরিক ও জেলেরা প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তারা বলেন, নিয়মিত অভিযান হলে অবৈধভাবে মাছ ধরা বন্ধ হবে এবং প্রাকৃতিকভাবে মাছের উৎপাদন বাড়বে। বিশেষ করে প্রজনন মৌসুমে অবৈধ জাল বন্ধের জন্য প্রশাসনের নজরদারি আরও জোরদার করার দাবি জানান তারা।

উল্লেখ্য, সরকারের মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এতে অর্থদণ্ড ছাড়াও জেল পর্যন্ত হতে পারে।

প্রশাসনের এমন উদ্যোগে স্থানীয়রা আশাবাদী যে, শেরপুরের বিল, নদী ও হাওরের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা পাবে এবং মৎস্য সম্পদে ফিরবে প্রাণচাঞ্চল্য।