মোহনগঞ্জ প্রতিনিধি:

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার হাছলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২৬ অক্টোবর) বিকালে উপজেলার কয়ড়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।  তিনি জীবন বাঁচাতে ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশের সহায়তা চান।

উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে মোহনগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাজুল ইসলামকে স্থানীয় উত্তেজিত জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। নিরাপত্তার স্বার্থে তাকে থানার একটি কক্ষে রাখা হয়।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওইদিন  সন্ধ্যা থেকে একদল ব্যক্তি থানায় গিয়ে তাজুল ইসলামকে ‘আওয়ামী লীগ ট্যাগ’ দিয়ে পুরোনো একটি নাশকতা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য ওসির ওপর চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় পুলিশ তা প্রত্যাখ্যান করে।

পরে রাত ১২টার দিকে ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমান থানায় একটি ছিনতাইয়ের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি বলেন, কয়রা পাড়া রাস্তায় বিকালে তাজুল ইসলাম তার গলায় ছুরি ঠেকিয়ে ৮৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়েছেন।

তবে ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ হলে বজলুর রহমান নিজেই অভিযোগ প্রত্যাহারের আবেদন করেন। কিন্তু পুলিশ আবেদন ফেরত  না দিয়ে তদন্ত করা হবে জানান । সত্যতা যাচাই করে সত্য হলে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোমবার সকালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাজুল ইসলামকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

মোহনগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুজ্জামান বলেন, “শিক্ষক তাজুল ইসলাম ৯৯৯-এ ফোন করে নিরাপত্তা চেয়েছিলে। আমরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করি। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে তাকে থানায় থেকে বিদায় দেওয়া হয়।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির পদ-পদবি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে একটি প্রভাবশালী পক্ষ তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা দপ্তরে অভিযোগ করে আসছে। গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে তাকে বিদ্যালয়ে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তৎকালীন এডহক কমিটির আহ্বায়ক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলামকে ছুটিতে পাঠিয়ে সহকারী শিক্ষক বজলুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেন। সোমবার ২৭ অক্টোবর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিদ্যালয়ে একটি আবেদনের তদন্ত  হওয়ার কথা ছিল ।

তাজুল ইসলামের সমর্থকদের দাবি, বিরোধপূর্ণ এই পরিস্থিতিরই ধারাবাহিকতায় তাকে সামাজিকভাবে হেয় ও আইনি ঝামেলায় ফেলার চেষ্টা চলছে।