বারহাট্টা প্রতিনিধি: মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ) কমিশনের অনুমোদন ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান দেশের অভ্যন্তরে আর্থিক লেনদেন করতে পারে না। অথচ অনুমোদনবিহীন ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় নিউ-রাইস সাসটেইন ডেভেলপমেন্ট কনসোর্টিয়াম (এনএসডিসি) নামের একটি প্রতিষ্ঠান এমআরএর অনুমোদন ছাড়াই সঞ্চয় ও ঋণ কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চলতি মাসের ৪ তারিখে উপজেলার পূর্ব বাজার (চন্দ্রপুর রোড) এলাকায় চিরাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমানের বাসায় প্রতিষ্ঠানটির শাখা উদ্বোধন হয়। এনএসডিসির প্রধান কার্যালয় নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় অবস্থিত এবং তাদের একাধিক শাখা রয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে বারহাট্টা শাখা অফিসে বৈধ অনুমোদনের কোনো সরকারি কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। অফিসে কেবল একটি টিন সার্টিফিকেট, ৩নং বারহাট্টা ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স এবং সার্টিফিকেট অফ ইনকর্পোরেশন প্রদর্শন করা হয়েছে। এই কাগজপত্রের ভিত্তিতেই প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের কাছ থেকে স্থায়ী আমানত, মাসিক ও সাপ্তাহিক সঞ্চয় গ্রহণসহ ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
অফিসের বাইরে ঝুলানো ছোট একটি কাগজে লেখা আছে-এখানে যাবতীয় ইলেকট্রনিক পণ্য কিস্তিতে বিক্রি করা হয়। তবে অফিসের ভেতরে গিয়ে কোনো পণ্যের উপস্থিতি বা বিক্রির প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
শাখা ব্যবস্থাপক আব্দুস ছামাদ জানান, আমরা এই কাগজগুলোর ভিত্তিতেই সঞ্চয় ও ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছি। গ্রাহকদের সঞ্চয়ের বিপরীতে পাশ বই দেওয়া হচ্ছে এবং ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে চুক্তি করে দিচ্ছি।
অন্যদিকে, বারহাট্টা নারী প্রগতি সংঘের শাখা ব্যবস্থাপক সুরজিৎ কুমার ভৌমিক বলেন, এমআরএ সনদ ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান আর্থিক লেনদেন করলে তা বৈধ নয়।
বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খবিরুল আহসান জানান, আমরা এনএসডিসিকে ডেকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তারা জানিয়েছে, তারা শুধুমাত্র পণ্য কিস্তিতে বিক্রি করে। সঞ্চয় বা ঋণ কার্যক্রমের কথা আমাদের জানায়নি। অনুমোদন ব্যতিত তারা এসব কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না।
তিনি বারহাট্টা উপজেলার জনগণের উদ্দেশে আরও বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেনের আগে অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে যে তাদের বৈধ অনুমোদন আছে কি না। সবাইকে এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের প্রতি সতর্ক থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, কয়েক বছর আগে একই উপজেলার এসটিসি নামের একটি প্রতিষ্ঠানও স্থানীয়দের কাছ থেকে ঋণ ও উচ্চ মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে কোটি টাকারও বেশি অর্থ আত্মসাৎ করে পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে।










