মোহনগঞ্জ প্রতিনিধি : নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ উপজেলায় দিন দিন বেড়ে চলছে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব। প্রতিদিনই নতুন রোগী আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছুটছেন, তবে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রশাসনের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে স্যালাইন ও ওষুধের তীব্র সংকট। ফলে সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি অক্টোবর মাসের শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রায় দুই শতাধিক মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রতিদিনই নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। মঙ্গলবার সকালেও অন্তত ৮ জন নতুন রোগী ডায়রিয়ার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকায় সচেতনতামূলক কোনো কার্যক্রম নেই। ফলে গ্রামীণ হাটবাজার থেকে শুরু করে উপজেলা সদর পর্যন্ত বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয় বাসি ও পচা খাবার অবাধে বিক্রি হচ্ছে। এসব খাবার খেয়ে ক্রমেই বাড়ছে ডায়রিয়া, আমাশয়সহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের প্রকোপ। তাছাড়া, বেশিরভাগ এলাকায় নলকূপের পানিতে আর্সেনিক ও জীবাণু থাকার আশঙ্কা থাকলেও তা পরীক্ষা করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যানবিদ মুশফিকুর রহমান বকুল জানান, চলতি অক্টোবর মাসে এ পর্যন্ত ১৯৩ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে বর্তমানে স্যালাইন ও প্রাথমিক ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে, যার কারণে অনেক রোগীকে বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. অলক কান্তি তালুকদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এদিকে স্থানীয় জনসাধারণের অভিযোগ, প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের সমন্বয়হীনতার কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। তারা দ্রুত স্যানিটারি ইন্সপেক্টর নিয়োগ, খাদ্যদ্রব্যের মান পরীক্ষা ও পর্যাপ্ত চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের পরিস্থিতিতে সবচেয়ে জরুরি হলো পরিষ্কার পানির নিশ্চয়তা, সচেতনতা বৃদ্ধি ও দ্রুত চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। না হলে ডায়রিয়া ছড়িয়ে মহামারির আকার ধারণ করতে পারে।