হালুয়াঘাট প্রতিনিধি : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা কয়েকদিনের অতিবৃষ্টিতে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার নিন্মাঞ্চলে বন্য পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বৃষ্টি বাড়লে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বোরাঘাট নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বুধবার ভোর থেকে প্লাবিত হতে শুরু করেছে উপজেলার গাজিরভিটা ইউনিয়নের মহাজনিকান্দা, বোয়ালমারা, আনচিংড়ি, নড়াইল ইউনিয়নের গোপীনগর, বটগাছিয়াকান্দা, কাওয়ালীজান, বিলডোরা ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুরসহ আশেপাশের কয়েকটিগ্রাম। পাহাড়ি ঢলে হালুয়াঘাট পৌর এলাকার কিছু অংশ ও উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চলে পানি ছড়িয়ে পড়ছে। কয়েকশত হেক্টর রোপা আমন ধান পানিতে নিমজ্জিত। এভাবে চলতে থাকলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি রোপা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতির আশংকা করছে কৃষকরা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বোয়ালমারা গ্রামের ৫০ থেকে ৬০ টি বাড়িতে ঢলের পানি উঠেছে। থাকার ঘর ও রান্না ঘরে পানি উঠার ফলে এসব পরিবারে সুপেয় পানি ও খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।
বোয়ালমারা গ্রামের আবুল কালাম বলেন, বুধবার ভোরে বোরাঘাট নদীর পানি ঘরে উঠে সবকিছু তছনথ করে দিয়েছে। ফলে সকাল থেকে রান্না করার মতো কোন ব্যবস্থা নেই। ফলে আমরা দোকান থেকে শুকনো খাবার কিনে এনেছি। এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে হয়তো আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে।
স্থানীয় কৃষক আব্দুল জব্বার বলেন, আমি ২ একর জমিতে রোপা আমন ধান রোপন করেছিলাম। সার বিষ থেকে শুরু করে সবকিছুই দেওয়া হয়েছে। এখন শুধু ফসল তুলার অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু বন্যায় আমার সকল জমি পানির নিচে। আমরা কৃষি কাজ করেই সংসার চালাই। এখন কিভাবে চলবো তা নিয়েই খুব চিন্তাই রয়েছি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নূরুল ইসলাম বলেন, গত বছর আমাদের আমাদের এলাকাসহ আশেপাশের কয়েকগ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ বছর একই অবস্থা। রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। কৃষকদের শতশত হেক্টর আবাদকৃত রোপা আমনের ফসলি জমি পানির নিচে নিমজ্জিত। এখনো পর্যন্ত সরতকারিভাবে কোন ত্রাণ সহযোগীতা আমাদের এলাকায় পৌছায়নি। অনেকের বাড়িঘরে পানি উঠে গেছে। বাড়িতে রান্নাবান্না বন্ধ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত ৬৫ হেক্টর জমি নিমজ্জিত হওয়ার তথ্য জেলায় পাঠিয়েছি। যেভাবে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল হচ্ছে তাতে করে এ সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। আমরা প্রতিনিয়তই তথ্য সংগ্রহ করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলীনূর খান বলেন, ইতিমধ্যেই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা যে সকল এলাকা বন্যা কবলিত হয়েছে সেখানে শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করছি। আগামীকালের মধ্যেই আমরা বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ নিয়ে যাবো। আমরা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি।










